যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি করা অথবা পবিত্র করা। যাকাত আদায়ের মধ্যে সম্পদ কমে না বরং বেড়ে যায়। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন পাক কালামে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা বাড়তি পাওয়ার ইচ্ছায় মানুষের সম্পদে সুদ হিসেবে যা প্রদান কর তা আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি হয় না বরং তোমরা যাকাত হিসাবে মানুষকে আল্লাহর পথে যা প্রদান কর তাই আল্লাহর কাছে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়’ (সুরা রুম–৩৯)। মানুষ ইবাদতের মাধ্যমে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, পাপের গ্লানি ও মনের আবর্জনা যেভাবে দূর করে যাকাতও মানুষের লোভ লালসা, মলিনতা, কার্পণ্যতা থেকে সেভাবে পবিত্র করে। পশু জবেহ করলে তার গোস্ত আমাদের জন্য হালাল কিন্তু মৃত গোস্ত আমাদের জন্য হালাল নয়। যবেহের মাধ্যমে পশুর হারাম রক্ত বের হয়ে গেল বলেই তা হালাল হলো অন্যথায় হারাম। হালাল সম্পদ থেকে যাকাত প্রদান করলে সকল সম্পদ হালাল হয় অন্যথায় হারাম হয় সকল সম্পদ। হারাম সম্পদ ভক্ষণ করে ইবাদত করলে কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ইরশাদ করেছেন, মোতাদেরকে আল্লাহপাক নির্দেশ দিয়েছেন, নামাজ প্রতিষ্ঠা কর যাকাত প্রদান কর। যে ব্যক্তি যাকাত প্রদান করলো না তার নামাজও হলো না। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছন, ‘যে সকল মানুষ সোনা, রূপা, সম্পদ জমা করে আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদেরকে (মৃত্যুর পর) কঠিন শান্তির সংবাদ দিন, যখন তার সম্পদগুলো দোজখের আগুনে গরম করে তাদের মুখমণ্ডল, পাশে, পিঠে দিবে এবং বলবে এগুলো তোমার সম্পদ যা নিজে ভোগের জন্য জমা করেছিল। তার স্বাদ গ্রহণ কর’ (সুরা তাওবাহ : ৪–৩৫)। মুসলমান হিসেবে স্বীয় সম্পদকে পবিত্র করে ব্যবহার করতে হলে, সমাজে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা আনতে হলে, নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ ইসলামী বিধি মোতাবেক গরীব দুস্থদের নিকট প্রদান করতে হবে। একটি পরিকল্পিত সমাজ, শান্তিময় সুন্দর জাতি, শোষণমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা একান্ত জরুরি। আল্লাহ পাক আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।