মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | রবিবার , ১ মে, ২০২২ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

 

বিদায় নিচ্ছে রহমত বরকত নাজাতের মাস মাহে রমজানুল মোবারক। রমজানের অর্জনগুলোর আনন্দ উদযাপন করার জন্য মহান আল্লাহ পাক আমাদের ঈদ প্রদান করছেন। মহান আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ প্রাপ্তিতে খুশি উদযাপন করা তাঁরই নির্দেশ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, হে নবী! আপনি বলুন, আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমত প্রাপ্তিতে তারা যেন আনন্দ উপভোগ করে। (সূরা ইউনুস, আয়াত ৪৫৮)। সাধারণ পরীক্ষায় পাসে মানুষ খুশি হয়। আর রহমত, বরকত, নাজাত, কদর ও কোরআন প্রাপ্তিতে মহাখুশি হওয়া প্রয়োজন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে লক্ষকোটি শুকরিয়া, তিনি আমাদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে রমজানের রোজা সম্পাদন করার তৌফিক প্রদান করেছেন। রমজান প্রাপ্তির পর তিনি আমাদের অশেষ ফজিলতপূর্ণ ঈদুল ফিতর দান করেছেন।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন ঈদুল ফিতরের মোবারক রাত হাজির হয়, তখন এই রাতকে বলে ‘লাইলাতুল জায়েজা’ বা পুরস্কারের রাত। যখন ঈদের দিন ভোর হয়, মহান আল্লাহ পাক ফেরেস্তাদেরকে সব শহরে প্রেরণ করেন। ফেরেস্তারা প্রতিটি রাস্তা ও গলির মাথায় দাঁড়িয়ে আহ্বান করেন, হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতগণ, তোমরা মহান আল্লাহ পাকের দরবারের দিকে চলো, যিনি মহান দাতা ও বড় বড় গুনাহ ক্ষমাকারী। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তাঁর বান্দার উদ্দেশে বলেন, হে আমার বান্দা, তোমরা আমার কাছে কী চাও? আমার সম্মান ও মহত্ত্বের শপথ! আজকের দিনে এই জামায়াতে (ঈদের নামাজ) তোমরা আখিরাতের জন্য যা চাইবে তা পূরণ করবো। আর দুনিয়ার জন্য যা চাইবে তাতে মঙ্গলের দিক দেখাবো (অর্থাৎ এমন জিনিস দেব যার মধ্যে তোমাদের মঙ্গল রয়েছে)। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার প্রতি যত্নবান হবে, ততক্ষণ আমিও তোমাদের ভুল ত্রুটিগুলো গোপন রাখবো। আমি তোমাদের সীমা লঙ্ঘনের সাথে অপমান করবো না। তোমরা ক্ষমাপ্রাপ্ত হিসেবে ঘরে ফিরে যাও। তোমরা আমাকে সন্তুষ্ট করেছো আর আমিও তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেছি। (আত্তারগীব ওয়াত্তাহীর, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা৬০)

রমজান মাস আমাদের জন্য রহমত স্বরূপ। এই মাসের আগমন ও বিদায়ের সময়টাও রহমতের। কারণ ঈদের দিন আমাদের জন্য গুনাহ মার্জনার দিন। আর রাতটি পুরস্কার অর্জনের জন্য নির্ধারিত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) সাওয়াব অর্জনের জন্য জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে, যেদিন মানুষের হৃদয় মরে যাবে সেদিন তার হৃদয় মরবে না। (ইবনে মাজাত, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা৩৬৫)। হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (.) হতে বর্ণিত একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। সে রাতগুলো হলো জিলহজ্বের ৮, , ১০ তারিখ; ঈদুল ফিতরের রাত আর ১৪ শাবানের রাত। (আত্তারগীব ওয়াত্তাহরীর, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা৯৮)

পূর্ববর্তী নিবন্ধদক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধ-শতাধিক গ্রামে কাল ঈদ
পরবর্তী নিবন্ধচারদিকে ঈদের আনন্দ