মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্তই আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ। এই মাস আগমনের সাথে সাথে প্রতিটি সৎ কাজের পূণ্য অনেক গুণ বেড়ে যায়। এ মাসে সিয়াম পালনকারীর ঘুমও ইবাদত। একটি নফল একটি ফরজের সমান আর একটি ফরজের পূণ্য সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয় এ মাসে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, রোজাদারের জন্য সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত গুনাহ মার্জনার প্রার্থনা করে। (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীর, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা- ৫৫)।
রোজা একটি গোপন ইবাদত। এটি প্রদর্শন করা যায় না। আল্লাহ পাক গোপন ইবাদত খুব পছন্দ করেন। রাসুল (সা.) রোজাকে বলেছেন ইবাদতের প্রবেশদ্বার। আল্লাহ পাক এ মাসে ব্যাপক বান্দার গুনাহ ক্ষমা করেন। প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, এ মাসের নাম রমজান রাখার কারণ হল, এ মাস বান্দার গুনাহ জ্বালিয়ে ফেলে। রোজাদারের গুনাহ মার্জনার জন্য সকাল-সন্ধ্যায় সত্তর হাজার ফেরেস্তা দোয়া করতে থাকে। রমজান মাসে রোজাদারের প্রতিটি সেজদার বিনিময়ে জান্নাতের এক একটি এমন বৃক্ষ দান করবেন, যে বৃক্ষের ছায়া অতিক্রম করতে ঘোড়ার আরোহীকে পাঁচশত বছর দৌড়াতে হবে। (শয়াবুল ঈমান, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩১৪)।
শুধু তাই নয়, আল্লাহ পাক রমজানের রাতের নামাজিদের প্রতিটি সেজদার বিনিময়ে পনেরশ নেকি দান করেন। এই রহমত-বরকত- নাজাতের মাসে আল্লাহ পাক মুমিন বান্দার জীবিকা বৃদ্ধি করে দেন। যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করায় তার গুনাহ ক্ষমা করা হয় এবং জাহান্নামের আগুন হতে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। যে ইফতার করান তিনি কবুলকৃত একটি রোজার পূণ্য অর্জন করবেন।
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সামর্থ্য না থাকলে এক চুমুক দুধ বা পানি বা একটি খেজুর দ্বারা ইফতার করালে কবুলকৃত একটি রোজার সওয়াব পাবে। আর যদি পেট ভরে আহার করায় তাহলে আল্লাহ পাক কেয়ামতের দিন হাওজে কাউসারের পানি পান করাবেন। ফলে তিনি আর তৃষ্ণার্থ হবেন না এবং শেষ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবেন। যে ব্যক্তি এ মাসে তার কর্মচারীদের কাজ সহজ করবে, আল্লাহ পাক তাকেও ক্ষমা করে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিবেন।
রাসুল (সা.) বলেন, এ মাসে চারটি কাজ বেশি করে করবে। দুটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর দুটি তোমাদের জন্য। আল্লাহর জন্য হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু (আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো মাবুদ নেই) সাক্ষ্য দেওয়া আর তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিজের জন্য যে দুটি করবে তা হল, আল্লাহর নিকট জান্নাত পাওয়ার আশা করা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রার্থনা করা। (ইবনে খুযাইমা, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৮৮৭)।