পবিত্র রমজান মাসের তাৎপর্য রয়েছে ইসলামের ইতহাসে। শান্তির ধর্ম দীক্ষা নিয়ে আরব দেশেবহু গোষ্ঠী ও গোত্রে বিভক্ত কোরাইশগণ এক নতুন আদর্শকে গ্রহণ করে হিংসা বিবাদ ভুলে যায়। ক্রমে ইসলামের আদর্শ গ্রহণ করে ছড়িয়ে পড়ে দেশ দেশান্তরে। শিক্ষা দিতে থাকে বিশ্বের মানুষকে ত্যাগ, সংযম ও আত্মশুদ্ধির বাণী। যে বাণীর মূলে প্রেরণা যোগিয়েছে, পবিত্র রমজান। দুর্ভাগ্য তাদের যারা এ মাস পেয়েও নিজের আত্মাকে শয়তানদের ওয়াসওয়াসা থেকে শুদ্ধ করতে পারে নি।
রাহমাতুল্লিল আ’লামীন আক্বায়ে মাওলা তাজেদারে মদিনা হযরত মুহম্মদ (দ.) একদিন মসজিদের মিম্বরের নিকট এসে প্রথম সিঁড়িতে পা রেখে বললেন, আমীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সিঁড়িতেও পা রেখে বললেন আমীন। সাহাবীরা তার কারণ জিজ্ঞাসা করলে রাসূল (দ.) বললেন, আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি তখন জিবরাইল ফেরেস্তা এসে বললেন, ঐ সকল মানুষের উপর অভিশাপ যারা পবিত্র রমজান মাস পেয়েও নিজের গুনাহ মার্জনা করিয়ে নিতে পারে নি। তখন আমি বললাম, আমীন (কবুল করুন)। দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলে জিবরাইল ফেরেস্তা বললেন, ঐ সকল ব্যক্তিদের উপর লানত যাদের সামনে আপনার নাম উচ্চারিত হওয়ার পর আপনার উপর দরুদ পড়েনি। তখন আমি উচ্চারণ করলাম, আমীন (কবুল করুন)। তৃতীয় সিঁড়িতে আমি পা রাখলে জিবরাইল আমীন বললেন, ঐ সকল ব্যক্তিদের উপর অভিশাপ যারা মাতা-পিতাকে বার্ধক্য অবস্থায় পেয়েও তাদের সেবা করে পরকালের বেহস্ত অর্জন করেনি। আমি বললাম, আমীন (কবুল করুন)।
জমিন যেমন শ্যামলে শ্যামল আর নীলিমায় নীল হয়ে উঠে অঝোর ধারায়, পবিত্র রমজানুল মোবরকের ত্রিশ রোজাও তেমনি দেহ-মন আত্মাকে কলুষমুক্ত ও পবিত্র করে তুলে। তাই পবিত্র রমজান শরীফ আগমন হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেস্তা প্রত্যেক রাতে বলেন, আছো কি কোন তাওবাকারী? যাকে ক্ষমা করা যায়। আছো কি কোন প্রার্থনাকারী? যার প্রার্থনা মঞ্জুর করা যায়। এভাবে সারা রোজা ফেরেস্তাটি বলতে থাকে এবং রোজাদার ফরহেজগার বান্দারা সাড়া দিয়ে ক্ষমা ও তাওবা কবুল করিয়ে নেয়।