মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | বৃহস্পতিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআন শরীফে কেবল রমজান মাসের কথা উল্লেখ করেছেন। এই মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়। আল বিরুণী লিখেছেন, এই মাসের কয়েকটি দিন ইতিহাস প্রসিদ্ধ। রমজান মাসের ছয় তারিখ ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত মাওলা আলী (র.) ও হযরত ফাতেমা (র.)’র শহীদ সন্তান ইমাম হুসাইন (রা.)’র জন্মদিন। এই পবিত্র মাসের দশ তারিখ হুজুর আকরম হযরত মোহাম্মদ (দ.)’র স্ত্রী হযরত খাদিজা (রা.)’র ওফাত দিবস। সতের রমজান ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়।

এই মাসের ঊনিশ তারিখ পবিত্র মক্কা বিজয় হয়। রমজানের একুশ তারিখ হযরত মাওলা আলী (র.) ইন্তেকাল করেন। বাইশ তারিখ হযরত আলী (রা.)’র জন্মদিন এবং সাতাশ তারিখ শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর। এই মাসের পরিসমাপ্তি ঘটে মুসলমানের খুশির মহোৎসব ঈদুল ফিতরের মাধ্যমে। সিয়ামের উদ্দেশ্য যে সংযম শিক্ষা তা কোরআন হাদিস ইজমা কিয়াসে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। নামাজের মতো সিয়ামও সামাজিক গুরুত্ব বহন করে। রমজান মাসে দান খয়রাত এবং জামাতে প্রাত্যহিক তারাবিহ নামাজ বিশেষ সামাজিক ভূমিকা পালন করে।

সিয়াম সাধনায় দেহের উপর মনের এবং ভোগের উপর ত্যাগের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে সিয়াম মানুষের অন্তরকে পরিশোধিত এবং আল্লাহর সান্নিধ্যের অন্তরায় অপসারিত করে। আল্লাহপাক পবিত্র ইসলামের মাধ্যমে মানুষের অন্তরাত্মাকে পরিশোধিত করে তুলতে চায়। যে ‘রমজ’ ধাতু হতে রমজান শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে, তার অর্থ পোড়ানো, দহন করা। সোনা যেমন আগুনে পুড়ে খাঁটি হয়ে উঠে, রমজানের এই পরীক্ষাও তেমনি মানুষকে পুড়িয়ে ভেতর হতে খাঁটি করে তোলে। এই খাঁটি মানুষ, জীবনের প্রত্যেকটি দিক প্রত্যেকটি চিন্তা ও কর্মে আল্লাহর অস্তিত্ব অনুভব করবে – ইসলাম তাই চায়। কারণ আল্লাহ তো তার নিকটেই আছেন, তার সবকিছু দেখছেন, শুনছেন।

এভাবে আল্লাহকে প্রত্যেক কর্মে উপলব্ধি করার নামই সত্যিকার জিকির। এই জিকির যে করবে তার পক্ষে কোনো মন্দ কাজ করা সম্ভব নয়। ইসলাম তার সামগ্রিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এ ধরনের মানুষ সৃষ্টি করতে চায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবড় বোনের মৃত্যু, নিখোঁজ যমজ দুই বোনসহ ৩ শিশু
পরবর্তী নিবন্ধকালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষতি