মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | বুধবার , ১৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে মানুষের নফসকে দমন করতে আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয় হাবিব (দ.) পথ দেখিয়ে গেছেন। নফস দমন হলে রূহ তাজা হয়। পবিত্র কোরআন পাকে বর্ণনা আছে, ‘রূহ প্রভুর নির্দেশ হতে আগত। নফস সম্পর্কে এ ধরনের কোনো উক্তি নেই। নফস মানুষের অসৎ কর্ম থেকে সৃষ্টি হয়। তাই প্রত্যেক নফসের মৃত্যু হবে বলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কালামে পাকে ঘোষণা করেছেন। প্রত্যেক রূহের মৃত্যুর কথা কোথাও নেই।
রূহের ক্ষেত্রে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থাৎ আল্লাহর নিকট থেকে আগমন আল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তন। কোরআন পাকে অন্যত্র বর্ণনা আছে, ‘অনন্তর উহাকে পূর্ণাঙ্গ করেছেন এবং তন্মধ্যে স্বীয় (আল্লাহর) আত্মা (রূহ) ফুৎকার করিয়াছেন। এখানেও আল্লাহ পাক নফসকে ফুৎকার না করে আত্মা বা রূহ ফুৎকার করেছেন। আল্লাহ পাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, ইবাদতের মাধ্যমে রূহকে তাজা করতে, শরীরকে নয়। শরীরকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলে রূহ দুর্বল হয়ে যায়। নফস ধ্বংসের মাধ্যমে রূহের জাগরণ হয়। রূহ স্রষ্টার কাছে প্রত্যাগমন করে পরকালের জীবনে অনন্ত সুখী হতে চায়। কিন্তু নফসের নফসানিয়ত তার সম্মুখে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মানুষের নফসানিয়ত ধ্বংস করার বড় হাতিয়ার হলো রমজানের রোজা।
সিয়াম সাধনা রূহকে নফসানিয়তের প্রভাবমুক্ত করে স্রষ্টার সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ করে। ভোগের জন্য আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত মানুষকে প্রেরণ করেননি। অনন্তকালের চিন্তা ত্যাগ করে সামান্য সময়ের জন্য আগত মোসাফির দুনিয়াকে নিয়ে ব্যস্ত। শত চেষ্টা কৌশলেও যে জীবনে (পরকালে) কোনো সুফল পাওয়া যাবে না, সে জীবন নিয়ে এতো উদাসীন কেন? প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) হাদিসে পাকে ইরশাদ করেছেন, যে নিজেকে চিনেছে সে আল্লাহকে চিনেছে। নিজের সত্তাকে আবিষ্কার করতে না পারলে তাকে জাগিয়ে তুলতে পারবে না। সত্তাকে জাগিয়ে তুলতে না পারলে নফসানিয়তের কাছে পরাভূত হতে বাধ্য। রমজানের রোজার কারণে নফসানিয়ত দূরীভূত হয়, আত্মার সাথে পরমাত্মার সাক্ষাৎ ও সংযোগ ঘটে। মানুষের উদ্দেশ্য সাধনই হলো স্রষ্টার সংযোগ। এই সংযোগের জন্য সকল নফসানিয়তের বন্ধনকে মুক্ত করতে হবে। তাতেই আমাদের মুক্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাণের স্পর্শে জাগবে চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়ের কান্না কে শুনবে