নগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। গতকাল বিকালে আদালতে পুলিশের প্রসিকিউশন শাখায় এ চার্জশিট জমা দেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।
জানা গেছে, চার্জশিটে খুনের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের নাম উঠে এসেছে। খুনে সরাসরি জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে খাইরুল নূর ইসলাম ওরফে খায়ের, আমির হোসেন ওরফে বাবু, মোক্তারসহ আরো কয়েকজনের। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে। এ মামলায় ২৪ আসামির মধ্যে ১৮ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয়জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে চার্জশিটে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট গ্রহণের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। জানতে চাইলে সুদীপ্তের বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, চার্জশিটে কি আছে সেটা আমি জানি না। আমি চাই, সুষ্ঠু বিচার হোক। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, সুদীপ্ত খুনের সাড়ে তিন বছর হয়ে গেছে। অনেক দেরিতে হলেও চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এখন আমার একটাই চাওয়া যত দ্রুত সম্ভব আসামিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। এ ঘটনায় সুদীপ্তের বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে আসে।
২০১৮ সালের ১২ জুলাই মিজান নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর এ খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে মাসুমের নাম উঠে আসে। পরে মাসুমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি ছাড়াও এ মামলায় আরও ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যারা সবাই মাসুমের অনুসারী বলে পরিচয় দিয়েছেন। এ মামলায় মাসুমের নাম আসার কিছু দিন পর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই মাসুমের দুটি অস্ত্রের নিবন্ধন বাতিল করে আদেশ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ৩ আগস্ট বিকালে মাসুম নিজে গিয়ে নিবন্ধন বাতিল করা তার অস্ত্রগুলো খুলশী থানায় জমা দিয়েছিলেন। পরদিন ঢাকার বনানী থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। বর্তমানে মাসুম এ মামলায় জামিনে আছেন।