মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ার দুই কিশোর। দেশীয় দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এই দুই কিশোরকে হাত করে নিয়ে যাওয়া হয় মিয়ানমারে। সেখানে তাদের জিম্মি করে মোবাইলে চাওয়া হচ্ছে মোটা অংকের মুক্তিপণ। এতে এই দুই কিশোরের পরিবারে চলছে আতঙ্ক ও আহাজারি। মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে জিম্মি অবস্থায় থাকা দুই কিশোর হলো চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ছৈনাম্মার ঘোনা শহীদুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ সায়মুন (১৫) ও পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিলাহাছুরা গ্রামের নাছির উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ সোলেমান (১৬)।
দুই কিশোরের পরিবার সদস্যদের অভিযোগ, চকরিয়ার বিএমচর ইউনিয়নের বাসিন্দা চিহ্নিত মানবপাচারকারী আলী হোসেন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে দুই কিশোরকে দালাল চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে। তাদের দাবি–দুই সপ্তাহ আগে স্থানীয় দালাল আলী হোসেন মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে দুই কিশোরকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাতারাতি তাদেরকে দালালের হাতে তুলে দেয়। এরপর থেকেই তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ কিশোরদের স্বজনরা জানান, তারা ইতোমধ্যে কয়েকবার মিয়ানমারের দালালের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পেরেছিলেন। তখন দালালরা জানায়, মুক্তিপণ দিলে ছেলেদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিস মেম্বার আলী হোসেনের সহায়তায় মিয়ানমারের এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
দুই কিশোরকে মিয়ানমারে আটকে রাখার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর বিএমচর ইউনিয়নের ছৈনাম্মার ঘোনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর থেকেই আলী হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে মানবপাচারকারী চক্রের এই তৎপরতা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের উদ্ধারে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। একইসাথে ভুক্তভোগী দুই পরিবারের সদস্যরা কিশোর সাইমুন ও সোলেমানকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, দুই কিশোরকে মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে আটকে রাখার ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িত দালালকে আটক করে দুই কিশোরকে উদ্ধারে চেষ্টা করা হবে।
