মালয়েশিয়ায় কর্মী যাবে এ মাসেই, খরচও কমবে

নেয়া হবে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে

| শুক্রবার , ৩ জুন, ২০২২ at ৪:১৬ পূর্বাহ্ণ

চুয়াল্লিশ মাস বন্ধ থাকার পর চলতি জুন মাসেই মালয়েশিয়ায় জনশক্তি পাঠানো শুরু হচ্ছে জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, খরচ এখনও নির্ধারণ না হলেও আগের চেয়ে কমবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানের সঙ্গে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য দেন। ইমরান আহমদ বলেন, আমরা আশা করছি, এই জুন মাসের ভেতরে মালয়েশিয়ায় মানুষ পাঠানোর ব্যবস্থা করে নিব। খবর বিডিনিউজের।

মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারিবেসরকারি পর্যায়ে (জিটুজি প্লাস) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পাঁচ বছর মেয়াদী এই চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয় ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সিকে।

কিন্তু প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র ওই ১০ এজেন্সিকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে দুই বছরে ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মীদের আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। তবে আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন, তারা পরেও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পান।

সরকারের তরফে নানা দেনদরবার আর করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শ্রমিক সংকটের প্রেক্ষাপটে গত ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। এরপর গত বছরের ডিসেম্বর মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

এমওইউ অনুযায়ী দেশের বৈধ সব রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর কথা বলে আসছিল বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে এক চিঠিতে মালয়েশিয়া সরকার জানায়, তারা ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্ট ও আড়াইশ সাবএজেন্টের মাধ্যমে কর্মী নিতে চায়। রিক্রুটিং এজেন্টের সংখ্যা এভাবে সীমিত করে রাখলে আগের মতো সিন্ডিকেশনের সুযোগ তৈরি হওয়ার আশঙ্কার কথা বলে আসছে বাংলাদেশে এই খাত সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান বলেন, আমাদের এখানে ১ হাজার ৫২০টি রিক্রুটিং এজেন্সি আছে। আমরা এই রিক্রুটিং এজেন্টদের তালিকা তাদেরকে দেব। এখন কাদের মাধ্যমে কর্মী নেবে, এটা তারা নির্ধারণ করবে। মালয়েশিয়ায় মোট কত কর্মী যেতে পারে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এমওইউতে পাঁচ বছরে ৫ লাখ কর্মী নেওয়ার কথা। এ বছরের মধ্যে ২ লাখ নেওয়ার কথা। আমাদের তো মনে হচ্ছে, এই বছরের মধ্যেই পাঁচ লাখ যাবে।

এমওইউ অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রান্তের খরচ কর্মী দিলেও মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ ও বিমান ভাড়া নিয়োগকর্তাই বহন করার কথা এর আগে জানিয়েছিল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কর্মীদের কত টাকা খরচ হতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তরে ইমরান আহমদ বলেন, আগেরবার কর্মী পাঠানোর সময় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আমরা নির্ধারণ করেছিলাম। এবার সেটা থেকেও কমে আসবে। তবে কত কমে আসবে সেটা এখনও হিসাব করি নাই। তবে নিশ্চিতভাবে কমে আসবে। মালয়েশিয়ায় কর্মীদের সর্বনিম্ন বেতন দেড় হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত হবে বলে জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক মাজার থেকে হারানো শিশু পাওয়া গেল অন্য মাজারে
পরবর্তী নিবন্ধডলারের দর বাজারের উপর ছেড়ে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক