মার্কেটে যেন ‘ঈদের কেনাকাটা’

স্বাস্থ্যবিধির দিকে নজর নেই অনেকের ।। আবার বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় টেনশনে ব্যবসায়ীরা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলার তৃতীয় দিনে নগরীর প্রায় সবগুলো মার্কেটে ছিল ক্রেতাদের সরব পদচারণা। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার সাতদিনের কঠোর লকডাউনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকে ক্রেতারা মার্কেটে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের খবর শুনে অনেক ক্রেতা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। বেচাবিক্রিও বেশ ভালো হয়েছে। অন্যদিকে সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা দেওয়া ফের ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ জানিয়েছেন। লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকবে, সরকারের পক্ষ থেকে এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর টেরীবাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, জহুর হকার্স মার্কেট, ভিআইপি টাওয়ার, আমীন সেন্টার, ইউনেস্কো সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, স্যানমার ওশান সিটি, শপিং কমপ্লেক্স, ফিনলে স্কয়ার, আফমি প্লাজা ও মিমি সুপার মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। রাস্তাঘাট লোকে লোকারণ্য ছিল। ফলে শপিংমল-মার্কেট অভিমুখের সড়ক ও আশপাশে যানজট দেখা দেয়। টেরীবাজারে আসা ঈশিতা সুলতানা নামের একজন ক্রেতা জানান, শুনেছি বুধবার থেকে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই ঈদের কেনাকাটা করতে এলাম। কারণ আগামী দিন পরিস্থিতি কী হয় বলা যায় না। রেয়াজুদ্দিন বাজারে আসা ক্রেতা আবরার হাসান বলেন, প্রয়োজনীয় কিছু কেনাকাটা করতে এলাম। এসে দেখি সবখানে ঈদের আমেজ চলছে। তবে স্বাস্থ্যবিধির দিকে অনেকের নজর নেই।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান আজাদীকে বলেন, আজ (গতকাল) প্রত্যেকটি দোকানে ভালো বেচাবিক্রি হয়েছে। মার্কেট বন্ধ হয়ে যাবে এটি শুনেই মূলত ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। তবে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার সাতদিনের জন্য সবকিছু বন্ধ রাখবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে গার্মেন্টস কারখানা খোলা থাকবে। তাহলে আমাদের দোষ কোথায়? আমরা বারবার বলে আসছি, সারা বছরের মধ্যে কেবল রমজান মাসেই ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করেন। কিন্তু এই সময়টা যদি লকডাউনের গ্যাঁড়াকলে পড়তে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
তিনি বলেন, করোনার কারণে গত বছর মার্কেট বন্ধ ছিল। তাই মার্কেটের হাজার হাজার শ্রমিক গত বছর ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব, পোশাক কারখানা যদি খোলা থাকে, তবে আমাদেরও যেন ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল আমিন বলেন, রমজান শুরু না হলেও জহুর হকার্সে এখন ঈদের আগ মুহূর্তের মতো বেচাবিক্রি চলছে। ক্রেতারা দল বেঁধে মার্কেটে এসে কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। প্রত্যেক ব্যবসায়ী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করছেন।
সানমার ওশান সিটি ও নাসিরাবাদের ফিনলে স্কয়ার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদ ইফতেখার বলেন, দোকান খোলার সময়সীমা শেষ না হতেই সরকার আগামী ১৪ তারিখ অর্থাৎ প্রথম রমজান থেকে ফের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। প্রথমে শুনেছিলাম, সবকিছু বন্ধ থাকবে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে, কঠোর লকডাউন হলেও পোশাক কারখানা চলবে। এই পরিস্থিতিতে আমরা কি করব বুঝতে পারছি না। ঈদের বাজার না হলে আমরা এতটা টেনশন করতাম না। গত বছর সব ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে জানানো হয়, ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে খোলা থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা : বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
পরবর্তী নিবন্ধসৌদি আরবে রোজা শুরু কাল