মার্কেটে মার্কেটে ভিড়

জমজমাট শীতবস্ত্র বিক্রি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে শীতবস্ত্র বিক্রি। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিংমল গুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত মার্কেটে ঈদ ও শীত মৌসুমের ওপর ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা অনেকাংশে নির্ভর করে। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদের সময় শপিং সেন্টারগুলো বন্ধ ছিল। ফলে ব্যবসায়ীরা বিরাট অংকের বাজার হারিয়েছেন। তাই এবার শীতের বাজারের দিকেই সবার দৃষ্টি ছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে শীত বাড়ার কারণে মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে।
গতকাল নগরীর মার্কেগুলোতে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী নারী পুুরুষ শীতবস্ত্র কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে চষে বেড়াচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল মধ্যবিত্তদের মার্কেট নামে খ্যাত জহুর হকার্স মার্কেটে। এছাড়া রিয়াজুদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, ২ নম্বর গেটের শপিং কমপ্লেক্স, বহদ্দারহাট স্বজন সুপার মার্কেট, চকবাজারের মতি টাওয়ার, গুলজার টাওয়ার, লালখান বাজারের আমিন সেন্টার, আগ্রাবাদ সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং আখতারুজ্জামান সেন্টারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এছাড়া অভিজাত মার্কেটের মধ্যে প্রবর্তক এলাকার আফমি প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, স্যানমার ওশ্যান সিটি, ফিনলে স্কয়ার, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার এবং সেন্ট্রাল প্লাজায় একই চিত্র দেখা গেছে।
এসব মার্কেটের বিক্রেতারা জানান, চীনা তৈরি ব্লেজার মানভেদে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এছাড়া চামড়ার তৈরি জ্যাকেট ২ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অন্যদিকে চীনা কম্বল আকারভেদে এক হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি শাল ও চাদর বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। বিদেশি ভালো মানের শালের দাম পড়ছে ৬০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া ভালো মানের সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা এবং ওলের তৈরি সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। জহুর হকার্সে আসা ক্রেতা তাজরিন তাসপিয়া রুশমি জানান, জহুর হকার্স মার্কেটে অনেক আনকমন কালেশনের দেখা মেলে। কিছুদিন আগেও এখান থেকে একটি সোয়েটার কিনেছিলাম। আজ (গতকাল) আবার এসেছি। পছন্দ হলে আরেকটি নিব।
রিয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন জানান, শীতকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক ব্যবসায়ী বাহারি ডিজাইনের শীতবস্ত্র নিয়ে এসেছেন। মার্কেটে ক্রেতা সমাগমও আগের তুলনায় বাড়ছে। শীতের বাজার নির্ভর করে প্রধানত ডিসেম্বর মাসের ওপর। এই একমাস বলা যায়, ব্যবসায়ীদের বিক্রি ভালো হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জহুর হকার্স মাকেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সব ধরনের ক্রেতাদের অন্যতম ভরসাস্থল জহুর হকার্স মার্কেট। গত ঈদের বাজার আমরা করোনা মহামারির কাছে হারিয়েছি। তাই ব্যবসায়ীরা শীতের মার্কেটের দিকে তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে ছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত বেশ ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে। শীত উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা দারুণ সব কালেকশন নিয়ে এসেছেন। এখানে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টসেরও অনেক পণ্যের পাশাপাশি বিদেশী শীতবস্ত্রও বেশ কিছু শীতবস্ত্রও নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মার্কেটে ক্রেতারা দেখে শুনে পছন্দে কাপড় কিনতে পারছেন। মার্কেটে শুধু যে মধ্যবিত্তরা আসেন তা কিন্তু নয়। অনেক উচ্চবিত্তদেরও দেখা যায়, জহুর হকার্স মার্কেটে এসে কেনাকাটা করছেন। এছাড়া মার্কেটের আশপাশে বিশেষ ফুটপাতগুলোতেও রয়েছে বাহারি শীতকালীন কাপড়ের সমাহার।
এদিকে নগরীর মার্কেটের আশপাশে ফুটপাতেও শীতবস্ত্র বিক্রির ধুম পড়েছে। ফুটপাতে নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের ভিড় বেশি। দিনমজুর আবু আলী জানান, ছেলে মেয়েদের নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে এসেছি। আমরা গরীব মানুষ ফুটপাত ছাড়া অন্য কোথাও কাপড় কেনার তো সাধ্য নাই। বিক্রেতা মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচুর ক্রেতা আসছেন। প্রতিদিন যে পরিমাণ বিক্রি আশা করেছিলাম, তার চেয়েও বেশি হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর টহলে সশস্ত্র হামলা, পাল্টা গুলিতে ১ সন্ত্রাসী নিহত