মায়ায় ঘেরা ঈদ

সুলতানা কাজী | শনিবার , ২৯ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ছোট্ট মেয়েটার কয়দিন ধরে জিজ্ঞাসা….’মাম্মা, কয়দিন পর ঈদ?’ এতদিন ভুলভাল বললেও গত রাতে সঠিকভাবে বললাম। ওর খুশিমাখা চোখের ঝিলিক দেখার মতোই ছিলো! বললাম, ‘আচ্ছা মা, ঈদে তুমি কী করবে?’ বললো, ‘তুমি বলো।ঈদ মানে উচ্ছ্বাস, আনন্দ। যান্ত্রিক শহুরে ঈদের ঘেরাটোপে বন্দী আমার সন্তানেরা। ভাঁটফুল, রাস্নাফুলের সযত্ন আহরণ কাকে বলে, তারা জানে না! ঈদের আগেই আমরা ভাঁটফুল, রাস্নাফুল জড়ো করতাম ঘর সাজাবো বলে। তামার নকশা করা টবে সজীব ফুল সাজাতাম। পূর্ব প্রস্তুতিমূলক মেহেদী পাতা তুলে আনতাম অন্য বাড়ি থেকে। প্রাণময় ছোটবেলার ঈদ যদি ধারণ করে রাখা যেতো, আমাদের সন্তানেরা আজ দেখতে পেতো হয়তো।ঈদের আগের সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে আবছা সরু বাঁকা চাঁদ দেখার আনন্দ ভুলি কী করে! চাঁদ উঠেছে, চাঁদ উঠেছেবলে গগনবিদারী চিৎকারে সারা গ্রাম আনন্দে ভাসতো। অনেকক্ষণ চলতো চিৎকার, চেঁচামেচি। একটা রেওয়াজ ছিলো মায়ের, ঈদ সালামি বলে একটা পিঠা বানাতেন, মা। গ্রামের সবাই গুরা পিঠা বলতো এ পিঠাকে। মেয়েরা হাতে মেহেদী লাগানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়তাম। শলা দিয়ে ফুলনকশা করা হতো হাতে।খুব সকালে গলা বাড়িয়ে মাসবাইকে চিৎকার করে ডেকে তোলতেন। পুরুষদের সবাই নতুন সাবানের মম সুঘ্রাণে গোসল সারতো। নতুন জামা পরে ঈদের জামাতে যাওয়ার জন্য সবাই প্রস্তুতি নিতো। অবশ্য দুধসেমাই খেয়েই মসজিদে যেতো সবাই। পরে আমরা গোসল করে নতুন জামা পরতাম। নামাজ থেকে পুরুষেরা ঘরে আসলেই শুরু হতো ঈদ আনন্দ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলো খুশির ঈদ
পরবর্তী নিবন্ধঈদ সামাজিক সমপ্রীতির বার্তা বহন করে