‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ, এখনই’ প্রতিপাদ্যে এবার পালিত হচ্ছে ৭৬ তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্রে মানবাধিকার সুরক্ষায় ৩০টি ধারার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি সর্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যপারে বিস্তারিত ঘোষণা রয়েছে। আর এই লক্ষ্যকে সমানে রেখেই পৃথিবীর অনেক দেশেই মানবাধিকার সুরক্ষায় সামগ্রিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সবার জন্য মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দিক। যা অনেকাংশে যেমন অর্জন রয়েছে আবার পাশাপাশি কিছু ব্যর্থতাও বিশ্বব্যাপি শান্তিপ্রিয় মানুষের অশান্তির কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে মানুষ কখনো কখনো মানুষেরই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোভ–হিংসা, সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ, প্রতারণা, মাদক, ধর্মীয় বিবাদ, পারিবারিক কলহের মত ঘটনা ব্যক্তি, পরিবার কিংবা সমাজের অশান্তির মূল কারণ হিসেবে অনেকটাই বিবেচ্য। মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা সংবাদপত্র সূত্রে প্রাপ্ত ভয়াবহতার চিত্র খুবই আহত করে। যা কারোরই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। মানুষই মানুষের জন্য যেমন দাঁড়ায় অন্যদিকে দুঃখজনক হলেও সত্য, মানুষই মানুষের ক্ষতির কারণ হয়। তাই মানুষকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা জরুরি। শান্তিময় বাসযোগ্য বিশ্ব গড়ার দায়িত্ব সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আমাদের সকলের। অপরাধীর পরিচয় শুধুই অপরাধী। তার জন্য যথাযথ আইন প্রয়োগ ও শাস্তি নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি মানুষের অপরাধবোধ সংশোধনের জন্য মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সামাজিক উদ্যোগ পরিবার তথা সমাজের সচেতন মহলকে নিতে হবে। মানুষ হিসেবে প্রত্যেকে প্রত্যেকের মানবাধিকার নিশ্চিতে সচেতন ও আন্তরিক হওয়ার বিকল্প নেই। মানুষের নৈতিক আদর্শ, শিক্ষা, পারস্পরিক আচরণ, কর্তব্যপরায়ণতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে নিজে অবগত হয়ে অন্যের প্রতি তার যথাযথ প্রয়োগ মানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। কেননা, যার যার অবস্থানে মানুষ মানবিক হলেই কেবল সর্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা বা সুরক্ষা সম্ভব। বিশ্বব্যাপি শান্তি বিরাজ করুক। মানুষ মানুষের কাছে নিরাপদ হোক, আজকের এই দিনে বিশ্বের সকল মানবিক মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস সফল হোক।