মানুষ পুড়িয়ে মারা বা গ্রেনেড মারলে একটাকেও ছাড়ব না : প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতিবাজ, হত্যাকারীদের সঙ্গে কিসের আলোচনা

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আপত্তি নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের মেয়েরা মিছিল করছে, আন্দোলন করছে, স্লোগান দিচ্ছে। তাদের যা ইচ্ছা তা তারা করতে পারছে। আমরা তাদের বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু যেভাবে তারা এই অত্যাচারগুলো করেছিল, সেটা আমরা ভুলব কিভাবে? সাধারণ মানুষ ভুলবে কিভাবে? আমরা বলেছি, আপনারা আন্দোলন করেন, সংগ্রাম করেন, মিটিং করেন, মিছিল করেন, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যদি কোনো মানুষকে পুড়িয়ে মারা বা বোমা মারা বা গ্রেনেড মারা বা এ ধরনের অত্যাচার করতে যায় কেউ, তাহলে একটাকেও ছাড়ব না। এটা হলো বাস্তব কথা। কারণ আমাদের ওপর যে আঘাত দেয়া হয়েছে, আমরা তা ভুলি নাই। আমরা সহ্য করেছি দেখে কেউ যেন মনে না করে, এটা আমাদের দুর্বলতা।

গতকাল ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ২০২২-এর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দেশে গণতন্ত্র থাকার কারণে যাদের ইচ্ছে আছে তারা নির্বাচন করবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আর যাদের নির্বাচন করার শক্তি নেই তারা ‘হয়ত করবে না’। তবে দেশের মানুষ নির্বাচন করবে, ভোটও দেবে। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলেন ডায়লগ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কাদের সাথে? ওই বিএনপি খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া। সাজাপ্রাপ্ত আসামি। যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। যে খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিয়েছিল, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও কোনোদিন হবে না, হতে পারবে না। আর আওয়ামী লীগ, ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা দুর্বলতা নয়, বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে, আমাদের সাথে আছে, ঐ খুনীদের সাথে নাই। জিয়া খুনি, খালেদা জিয়া খুনি, তারেক জিয়া খুনি। তিনি বলেন, তারেক জিয়া শুধু খুনি নয়, অর্থ পাচারকারি এবং অস্ত্র চোরাকারবারি। ওদের কি অধিকার আছে মানুষের সামনে দাঁড়ানোর, আর ভোট চাওয়ার বা রাজনীতি করার? তারপরেও আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।
আল্লাহতাআলা এই ধরনের গর্বভরা কথা পছন্দ করে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আর বাংলাদেশের মানুষ তো একেবারেই পছন্দ করে না। সেজন্য খালেদা জিয়ার মুখের কথা তার বেলায়ই লেগে গেছে। বিএনপির ভোট চুরির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন ওই দুর্নীতিবাজ, সাজাপ্রাপ্ত, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী আর অর্থ পাচারকারী, অস্ত্র পাচারকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, আইভি রহমানের হত্যাকারী আর তার… জিয়াউর রহমান ছিল আমার বাবার হত্যাকারী। এদের সাথে ডায়লগ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। আবার মানবাধিকারের কথাও বলে- এটা কেমন ধরনের কথা সেটাই আমি জিজ্ঞেস করি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভোট চুরির কারণে তাকে দেশের মানুষ টেনে নামিয়েছিল উল্লেখ করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রসঙ্গ বক্তব্যে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভোটের অধিকার সকলের। যেকোনো নির্বাচনে আমাদের মহিলারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। তার গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করবে। আর নির্বাচনে স্থানীয় সরকারে ২০ পারসেন্ট কোটা আছে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ সব জায়গায় মেয়েদের কোটা রাখা আছে। সেখানে আমাদের মেয়েরা সরাসরি নির্বাচনও করতে পারে, কোটার ভিত্তিতেও করতে পারে। সেই সুযোগটা আমরা করে দিয়েছি।

সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে মায়ের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে সন্তান যেন জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাসের সঙ্গে না জড়িয়ে পড়ে সেজন্য মায়েদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। ছেলে-মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে তারা কখনও বিপথে যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছেলে-মেয়ে যেন নিজের মনের কথা মায়ের কাছে খোলা মনে বলতে পারে সেই ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তারা কখন কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মেশে, কী করে সেই দিকেও নজর রাখতে হবে।

নারীদের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২১ অনুযায়ী বিশ্বের জেন্ডার বৈষম্যসূচকে ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা এখন ৬৫। আর দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা কিন্তু এক নম্বরে আছি। যার জন্য নারী উন্নয়ন এবং জেন্ডার বৈষম্য আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম নিয়ে বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা জানালেন কাদের
পরবর্তী নিবন্ধনৌকার আদলে মঞ্চ, বসতে পারবেন ২শ অতিথি