সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রের প্রতি আগ্রহী করার জন্য নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এক্ষেত্রে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচারণা চালানোরও পরামর্শ দেন তিনি। দৈনিক আজাদীর সাথে একান্ত আলাপে এসব কথা বলেন তিনি। আজ শুক্রবার বাদ জুমা নগরের হযরত আমানত শাহ (রহ.) এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন ডা. শাহাদাত। এরপর আন্দরকিল্লাহ, পাথরঘাটা ও ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করবেন তিনি। গণসংযোগকালে দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন এ মেয়র প্রার্থী।
নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটারদের কেন্দ্রের প্রতি আগ্রহী করার জন্যই তো প্রচারণা। তাই আমাদের প্রচারণারও মূল উদ্দেশ্য, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে এবং ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদান করবেন সেটা প্রতিষ্ঠা করা। প্রার্থী হিসেবে আমরা আমাদের কাজ করে যাব। পাশাপাশি যাদের উদ্যোগে ভোটাররা আসবেন তাদের কি প্রস্তুতি আছে সেটাও জানার বিষয় আছে। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রমুখি করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আছে। পাশাপাশি প্রশাসনেরও দায়িত্ব আছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের ন্যক্কারজনক ভূমিকার কারণে মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। যে ভীতিটা এখনো কাটেনি। তাই মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পায়। নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার অবস্থা দেখে সবাই ভোটকেন্দ্রের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। মূলত যাদের কারণে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে গেছে তাদের উদ্যোগ নেয়া বড় প্রয়োজন, যেহেতু তারা বলেছে ‘নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করবে’। তাদের উচিত এডভার্টাইজমেন্ট করে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অথবা বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা করে জনগণকে জানানো। কিন্তু তারা সেটি করছে কী না সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থী হিসেবে এটা আমরা জানতে চাই।
নগর বিএনপির এ সভাপতি বলেন, ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএমে কিভাবে ভোট দিবে সেটাও একটা ব্যাপার আছে। এ বিষয়ে জনগণকে আরো বেশি সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি ইভিএম সুরক্ষা পাচ্ছে কিনা সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ছাত্রলীগ-যুবলীগ কেন্দ্রে প্রবেশ করে দাঁিড়য়ে থাকে এবং ভোটার প্রিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার সাথে সাথে তারা ভোট দিয়ে দেয়। তাই ব্যালট প্যানেলকে সুরক্ষা দিতে হবে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত করা গেলে বহিরাগতদের ঠেকানো যাবে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা দেখেছি চট্টগ্রামের আশেপাশের উপজেলা এবং জেলাগুলো থেকে বহিরাগতরা এসে ভিড় করেছিল। এবার প্রায় ১০ লক্ষ বা অর্ধেক ভোটার মহিলা। বহিরাগতরা এসে ভিড় করলে সেটা মহিলা ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তিনি বলেন, অতীতে আমরা দেখেছি ভোট দিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ছেলেরা আবার লাইনে দাঁড়িয়ে যায়। যাতে অন্য কেউ লাইনে না দাঁড়াই বা বিরক্ত হয়। তাই ভোট দেয়ার পর কেউ যেন লাইনে চাপাচাপি না করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম কিন্তু ভোটার হওয়ার পরও ভোট দিতে পারেনি। কাজেই আওয়ামী লীগ যতই উন্নয়নের কথা বলুক ভোটারদের অধিকারের জায়গা নিশ্চিত করতে না পারলে তাদের বড় বড় কথা কোন কাজে আসবে না। সামগ্রিক প্রস্ততি সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছি। পাশাপাশি কেন্দ্র কমিটির সাথে মতবিনিময় করেছি। নেতাকর্মীরা মাঠে ছিল। করোনা সুরাক্ষা সামগ্রী ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে ওয়ার্ডের নেতাদের সম্পৃক্ত করেছিলাম।