একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, পৃথিবীতে মানব জাতিকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছেন। রোগ–শোকসহ নানা দুর্বিপাক এবং মহামারীতে চিকিৎসকরা যেভাবে এগিয়ে এসে মানব সম্প্রদায়কে উদ্ধার করেন তা অতুলনীয়। সৃষ্টিকর্তা ডাক্তারদের হাতকে নিজের হাত বানিয়ে তার সৃষ্টিকে রক্ষা করেন। একজন মানুষের জীবনে এটা যে কত বড় প্রাপ্তি, কত বড় সম্মান, তা অনুধাবন করা কঠিন। নবীন চিকিৎসকদের বিষয়টি অনুধাবন করে নিজেদের মানবিক চিকিৎসক হিসেবে গড়ে ওঠারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের ১৩তম ব্যাচের ইন্টার্ন সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। নবীন চিকিৎসকদের হিপোক্রেটিক ওথের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা রোগীদের সাথে যে আচরণ করবেন বলে হিপোক্রেটিক শপথ নিয়ে চিকিৎসক জীবন শুরু করছেন সেটা জীবনভর মনে রাখা এবং মেনে চললেই মানুষের সাথে চিকিৎসকদের দূরত্ব ঘুচে যাবে।
চিকিৎসকদের কর্মজীবনে সততা, দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে আজাদী সম্পাদক বলেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানবিক হতে হবে। রোগীদের আত্মার আত্মীয় হয়ে তাদের দুঃখ–কষ্ট অন্তরে অনুভব করতে হবে। গরিব, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো যাতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে একজন–দুজন হলেও গরিব ও অসহায় রোগীকে ফ্রি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি যা করবেন তার প্রতিদানও ওভাবে পাবেন। জগতে কোনো কাজই ব্যর্থ হয় না। আপনি কারো জন্য কিছু করলে কেউ না কেউ আপনার জন্যও করবে। অসুস্থ এবং অসহায় মানুষগুলোর পাশে মানবিক গুণাবলী নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। নবীন চিকিৎসকদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের অ্যাম্বেসেডর আখ্যায়িত করে এম এ মালেক বলেন, আপনাদের মানবিক এবং কল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড এই প্রতিষ্ঠানের নাম আরো উজ্জ্বল করবে।
হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর। প্রধান বক্তা ছিলেন হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ।
অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী কমিটির জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাগির, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল সেক্রেটারি মো. আহসান উল্লাহ, সদস্য প্রফেসর ডা. কামরুন নেসা রুনা, মো. হারুন ইউসুফ, মেডিকেল কলেজের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার বড়ুয়া, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. জালাল উদ্দিন, ইএনটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আবদুল কাইয়ুম, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইন্টার্ন কোঅর্ডিনেটর ডা. রজত শংকর রায় বিশ্বাস, অভিভাবক ফজলুর রহমান, ডা. সিরাজুল হক, ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. আসিফুল হক বক্তব্য রাখেন।
হাসপাতালের উপ–পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) ও অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য ডা. এ কে এম আশরাফুল করিমের তত্ত্বাবধানে এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. তন্ময় পাল, ডা. মইনুল ইসলাম, ডা. ফাবিহা তাফান্নুম ও ডা. তামান্না জান্নাত সেতুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. অলক নন্দী, প্রফেসর ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রফেসর ডা. মোজাম্মেল হক শরিফি, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. নাসির উদ্দিনসহ মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষিকা, ডাক্তার, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান অতিথি এম এ মালেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন।