মানবিক মানুষের বিকল্প নেই

মোহাম্মদ ওয়াহিদ মিরাজ | শনিবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ

আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন ধর্মের অনুসারী আর আমাদের অনুসরণকৃত স্ব স্ব ধর্মের বিধিবিধান পালন করা মানেই হলো সমাজে বসবাসরত সকলের জীবনে শান্তি প্রাপ্তি। কারণ সকলের ধর্মীয় গ্রন্থেই অন্যায়, অবিচার, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদির শাস্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক তা হতে অনেক দূরে থাকার জন্য নির্দেশনা রয়েছে মর্মে প্রমাণিত হয়েছে। অথচ ধর্মীয় নির্দেশনা না মানার ফলে বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশের অধিকাংশ জায়গায় চলছে দু্র্‌বলের প্রতি সবলের শক্তি প্রয়োগ তথা অন্যায় কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা। এমন ঘৃণিত অপকর্ম আমাদের দেশেও কিছু কিছু জায়গায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ভয়াবহ আকারে তা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজের স্বার্থ রক্ষায় অকল্পনীয় কুকর্ম করার মতো মানুষ রূপের অমানুষ আমাদের চারপাশে প্রতিমুহূর্তে বিচরণ করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এদের দমন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছি, যা হলো পরোক্ষভাবে এসব অন্যায়কে সমর্থন করা বা এদের অপকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এদের উৎসাহিত করা এবং এমন অপকর্মে নিজেও অংশীদার হওয়া।

সমাজে বিভিন্নভাবে ন্যায় কাজ করার জন্য বা অন্যায় দমনের উপদেশ বাণী ছড়িয়ে দেয়া ব্যক্তিত্বগণকে নিয়ে অহঙ্কার করার পরক্ষণে যখন এমন কিছু ব্যক্তিত্বকে নিজের সে উপদেশমূলক কথা নিজেই না মেনে নিজ স্বার্থে অতি উৎসাহে অন্যায় কর্মকাণ্ড নিজে করতে বা নিজের প্রিয় লোক বা চামচাকে করার জন্য সুযোগ দিতে দেখি তখন আর বুঝতে দেরি হয় না যে, সমাজে অন্যায় বা বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেয়ার পিছনে এদেরও বিশাল ভূমিকা রয়েছে। মানুষের প্রতি মানবতা বা আন্তরিকতার ঘাঁটতির ফলে আমরা অনেকেই নিজের সৃষ্টিকর্তার আদেশানুযায়ী মানবিক মানুষের তালিকায় নিজেকে অন্তর্ভূক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছি। নিজের নাড়িছেড়া ধন অসুস্থ থাকায় তার পরিবর্তে তাকে ফেলে অন্যের সন্তানকে চুরি করার কথা শুনে এদের মানুষ ভাবতেও যেমন লজ্জাবোধ হয় তেমনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে অগ্নিকাণ্ড বা অন্য কোনও মাধ্যমে যানবাহনে বা রাস্তায় নিরীহ অগণিত মানুষকে নিহত বা আহত করার দৃশ্য দেখে বা সংবাদ মাধ্যমে দেখে অবাক হতে হয়। যারা এমন অপকর্মে লিপ্ত তারা হয়তো অনুধাবন করতে ব্যর্থ যে, একজন মানুষের মৃত্যু মানেই একটি পরিবারের সারা জীবনের বুকভরা কান্না আর দীর্ঘশ্বাস। সে নিজেই যদি এমন অপমৃত্যুর সম্মুখীন হয় তখন তার পরিবারের করুণ অবস্থা মন থেকে বোঝার মতো জ্ঞানের অভাবের কারণও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। যাদের নিজের বা নিজের পরিবারের প্রতি আন্তরিকতার অভাব রয়েছে তারাই অন্যের পরিবারের সদস্যকে বিনা কারণে কাপুরুষের মতো হত্যা বা নিজের জন্মভূমিতে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। এ কথা সুস্পষ্ট ভাবে বলা যায় যে, ইতোমধ্যে এরা সচেতন মহলের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে। তবে মনুষ্যত্বসম্পন্ন মানুষের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত যে, অন্যায় দমনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সকলের ভালোবাসার মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাকসাম কুমিল্লা সড়কে বাস সার্ভিস চালু করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধআজাদী হারালো আজাদী অন্তপ্রাণ মানুষ, আমরা হারালাম এক প্রিয় মানুষকে