প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার উপদেষ্টা পরিষদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক উচ্চ এবং বৈচিত্র্যময়। জনগণ আশা করেন যে, তিনি দূরদর্শী নেতৃত্ব, মানবিক দৃষ্টিকোণ এবং সুশাসনের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবেন। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন দিগন্তে উন্মোচন করতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে এমন একজন নেতা হবেন যিনি দেশকে অস্থিরতা থেকে বের করে আনার জন্য স্বচ্ছ নিরপেক্ষ এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রদান করবেন।
জনগণের প্রত্যাশা তিনি শুধু বর্তমান সমস্যা গুলোর সমাধান দেবেন না বরং ভবিষ্যত দেশের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবেন, যেখানে শান্তি, ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন একসাথে সমৃদ্ধ হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী এবং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত যার কারণে জনগণ তার নেতৃত্বকে অনেক বেশি আস্থার সাথে দেখে থাকেন। তাই প্রধান উপদেষ্টা ও তার উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা গুলো থাকবে নিম্নরূপ: ১) দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা: বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায় বিচার কে ব্যাহত করছে। জনগণ আশা করবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার উপদেষ্টা পরিষদ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবেন যেখানে জনগণের সম্পদের সুস্থ ব্যবহার হবে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ২) গণতন্ত্র চর্চা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্তিত্বশীলতা একটা বড় সমস্যা হিসেবে বিদ্যমান তাই জনগণ প্রত্যাশা করবে যে, তারা একটি নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক এবং সুস্থ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। জনগণের প্রত্যাশা থাকবে যে, তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করবেন এবং গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরো মজবুত করবেন। ৩) অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন: তিনি ক্ষুদ্র ঋণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। প্রত্যাশা থাকবে যে তিনি দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন ধারা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন বিশেষ করে দরিদ্র বিমোচনে নারীর ক্ষমতায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি নতুন নীতি প্রণয়ন করবেন বলে জনগণ আশা করবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করা ও মুদ্রাস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ রাখা তার সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। ৪) দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল নৃত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি। জনগণ প্রত্যাশা করে তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
মজুতদারি ও কৃত্রিম সংকট রোধ করবেন। একইসঙ্গে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভর্তুকি প্রদান এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করার মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে হবে বলে জনগণ প্রত্যাশা করে।
৫ ) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন : এই সরকারের কাছে জনগণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে জনগণের প্রধান চাহিদা। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে উন্নত চিকিৎসা, গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা এবং রোগ প্রতিরোধে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। ৬) জাতীয় ঐক্য ও সামাজিক সংহতি প্রতিষ্ঠান : বর্তমান বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি ও জাতিগত গোষ্ঠীর সহাবস্থান রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা হবে তিনি এই ভিন্নতাকে সম্মান করে একটি জাতীয় ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করবেন। প্রত্যাশা থাকবে তারা সামাজিক সাম্য, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে।