আগামী বছর (২০২৩ সাল) থেকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রমের নতুন কারিকুলাম। আর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে সারাদেশের ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং কার্যক্রম চলছে। এই পাইলটিং কার্যক্রমের আওতায় মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের ৫টি, আর দুটি প্রতিষ্ঠান রাঙ্গামাটির। চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে– মহানগরের ফুলকি সহজপাঠ বিদ্যালয় ও পাঠানটুলি সিটিকর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলা পর্যায়ে আনোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মীরসরাইয়ের সরকারহাট এনআর হাই স্কুল এবং সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। রাঙ্গামাটির দুটি প্রতিষ্ঠান হল– কাপ্তাই শহীদ সামছুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কাউখালীর হারাঙ্গী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়।
এসব প্রতিষ্ঠানে গত জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ–পরিচালক দেবব্রত দাশ। কেবল ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রাথমিকের ১ম ও ২য় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামে পাঠদান চালু হবে। একই ভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে প্রাথমিকের ৩য় ও ৪র্থ এবং মাধ্যমিকের ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু হবে। ২০২৫ সালে প্রাথমিকের ৫ম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের দশম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামে পাঠদান চালু হবে। ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে নতুন এ কারিকুলাম চালু হবে। অর্থাৎ ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে জাতীয় শিক্ষাক্রমে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হবে। আর নতুন এ কারিকুলাম বাস্তবায়নে এরই মাঝে আঞ্চলিক উপ–পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা–থানা শিক্ষা অফিসারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাউশি অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন। পরবর্তীতে প্রশিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে জানিয়ে মো. আজিজ উদ্দিন বলেন, প্রশিক্ষনের মাধ্যমে জেলা–উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক তৈরি করা হবে। এই প্রশিক্ষকরাই সারাদেশে নতুন কারিকুলাম বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।
উল্লেখ্য, নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোন পরীক্ষা থাকবেনা। এসএসসির আগে থাকছেনা কোন পাবলিক পরীক্ষা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত শাখার বিভাজন থাকবে না, অভিন্ন বিষয়ে হবে পাঠদান। নতুন নিয়মে এখনকার মতো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে না। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। প্রতি বর্ষ শেষে বোর্ডের অধীনে এই পরীক্ষা হবে। এরপর এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। প্রস্তাবিত এ শিক্ষাক্রম ২০২৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন শুরু হবে। আর উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে ২০২৭ সালে।












