মাদকের লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব, সন্দেহ থেকে খুন

রিয়াজউদ্দিন বাজারে সুমন খুনে গ্রেপ্তার ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য

ঋত্বিক নয়ন | বুধবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

সহযোগীদের কান কথা শুনে নিজেকে বাঁচাতে মাদকের আড্ডার পার্টনার সুমন সাহাকে খুন করলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মফিজুর রহমান দুলু (৫৬)। দুলু ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে বিস্তারিত জানান। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুই সহযোগী হলেন মো. মামুন (৩৮) ও নুর হাসান রিটু (২৮)

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, বিভিন্নজনের কানাঘুষায় খুনের পরিকল্পনার সন্দেহ থেকেই পিটিয়ে খুন করা হয় সুমন সাহাকে। খুনের ঘটনাটি সংঘটিত করেছে দুলু, মামুন ও রিটু। সোমবার রাতে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের আরএস টাওয়ার নামে একটি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, নিহত সুমন মাদক সেবনরত অবস্থায় দুলুকে স্বর্ণ কেনার জন্য টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। ওই বিষয়টি মামুন জানতে পেরে দুলুর মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয় যে, সুমন দুলুকে মারার জন্য লোক ঠিক করেছে। তাকে টেকনাফ নিয়ে যাবে বলেছে। তার জন্য কয়েকজন লোকও ঠিক করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন লোককে দিয়ে দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ অফিস রেকি করিয়েছে। এই বিষয়ে সন্দেহ ঢোকায় সুমনকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে দুলু। অন্যান্য দিনের মতো সুমন গত ২৬ নভেম্বর রাতে দুলুর ভাড়াকৃত রুমে মাদক সেবন করতে গেলে সেখানে সুমনকে আটকে রাখে এবং তাকে (দুলু) মারার জন্য কাকে ঠিক করেছে এবং বাসাঅফিস কেন রেকি করিয়েছে তা বারবার জানতে চায় দুলু। এ বিষয়ে কোনো তথ্য না দেওয়াতে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে মারধর করে সুমনের কাছ থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মামুন ও নুর হাসান রিটুদের দিয়ে মারধর করে তথ্য বের করার চেষ্টা করেও না পেয়ে সুমনকে হাত বেঁধে উলঙ্গ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে।

তিনি বলেন, নিহত সুমন ও গ্রেপ্তার তিনজন ওই ভবনের একটি কক্ষে মাদক সেবন করত। সেই রুমেই সুমনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে (সুমন) মৃত ঘোষণা করেন। পরে মঙ্গলবার ভোরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তারা নেশাগ্রস্ত ছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ভিকটিম সুমন দীর্ঘদিন ধরে আসামি দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ ভাড়া করা রুমে আসাযাওয়া করত। সেখানে গিয়ে তারা একসাথে মাদক সেবন ও আড্ডা দেয়। আসামি দুলু ও ভিকটিম সুমন স্বর্ণ চোরাচালান ও মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিল। এ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়। লেনদেনের বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সুমনের কাছ থেকে আসামি দুলু টাকা পাওনা থাকলেও টাকা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। সুযোগসন্ধানী মামুন ও রিটু সেটি কাজে লাগিয়ে সুমন প্রসঙ্গে দুলুর মনে সন্দেহের বীজ বপন করে এবং তারই প্রেক্ষিতে ঘটে খুনের ঘটনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ, ৫ দিনের মধ্যে স্কুলে ভর্তি
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের ১৬ আসনে আরও ৩৭ জনের মনোনয়ন সংগ্রহ