দফায় দফায় নিলাম অনুষ্ঠিত হলেও চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড দখল করে পড়ে থাকা ১১২টি বিলাসবহুল গাড়ির কোন সুরাহা হচ্ছে না। এই ১১২টি কন্টেনারভর্তি গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। গত ৮ বছর ধরে ইয়ার্ড দখল করে রাখা এসব কন্টেনারের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্তত ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে। উক্ত কন্টেনারগুলোর কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রায় ৪০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হয়নি।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেনার রাখার স্থানাভাব বিভিন্ন সময় প্রকট হয়ে উঠে। বছর কয়েক আগেও ত্রিশ হাজার টিইইউএস ধারণক্ষমতার ইয়ার্ড নিয়ে প্রায়শ দিশেহারা হয়ে উঠত বন্দর কর্তৃপক্ষ। অবশ্য দফায় দফায় ইয়ার্ডের পরিমাণ বাড়িয়ে বর্তমানে বন্দরে ৪৯ হাজার টিইইউএস কন্টেনার রাখার জায়গা রয়েছে। ইয়ার্ডের এই জায়গা নিয়েও প্রায়ই সংকট তৈরি হয়। বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রেশনিং করে কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা হয়। কন্টেনার রাখার জায়গার অভাবে জাহাজ থেকে কন্টেনার নামানো ব্যাহত হওয়ার রেকর্ডও রয়েছে।
আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের কন্টেনার রাখার জায়গা নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় দিশেহারা হলেও বন্দরের ইয়ার্ড দখল করে পড়ে আছে ১১২টি বিলাসবহুল গাড়ি। কন্টেনারভর্তি এসব গাড়ি বিক্রির জন্য দফায় দফায় নিলাম অনুষ্ঠান করা হলেও নানা কারণে বিক্রি হয়নি। আবার কোনো কোনো গাড়ির ব্যাপারে মামলাও রয়েছে। এসব কারণে গত ৮ বছর ধরে ইয়ার্ড দখল করে পড়ে থাকা গাড়িগুলো বন্দরের কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কন্টেনারগুলোর ব্যাপারে নিয়মিত তাগাদা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নিয়মের গ্যাঁড়াকলে পড়ে এসব গাড়ি ইয়ার্ড দখল করে পড়ে রয়েছে।
সূত্র জানায়, ইয়ার্ড দখল করে রাখা না হলে গত ৮ বছরে বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্তত চল্লিশ হাজার টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করতে পারত। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করতে পারত বলে সাম্প্রতিক একটি হিসেবের উদ্ধৃতি দিয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, কন্টেনারগুলোর কারণে আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এতে আমাদের কোটি কোটি ডলারের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতকাল শুক্রবার দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা প্রায়শ চিঠি দিই। নিয়মিত তাগাদা দিই। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামও ডাকে, কিন্তু কন্টেনারগুলোর ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয় না। এগুলো আমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।