মাতৃগর্ভে বছরে নষ্ট দুই সহস্রাধিক সন্তান

চমেক হাসপাতাল গাইনি বিভাগের তথ্য অল্পবয়সে গর্ভধারণ ও অপুষ্টিসহ নানা কারণ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ জুন, ২০২২ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

মায়ের গর্ভে থাকতেই বছরে ২ হাজারের বেশি সন্তান নষ্ট হচ্ছে। এটি কেবল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গাইনি বিভাগের তথ্য। বিভাগটির ২০২১ সালের সেবা সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মায়ের গর্ভে থাকতেই মোট ২ হাজার ২১৯টি বাচ্চা নষ্টের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। অর্থাৎ এই সংখ্যক (২২১৯) নারী গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়া সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন গাইনি বিভাগে। চিকিৎসকরা বলছেন, এর মাঝে ইচ্ছাকৃতভাবে এভরশন বা গর্ভপাতের সংখ্যা হাতে গোনা। যা ১ থেকে ২ শতাংশের বেশি নয়। আর বাকি সব ঘটনাই অনিচ্ছাকৃত বাচ্চা নষ্ট হওয়ার। অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত বা ছোটখাটো ভুলে বছরে দুই হাজারের বেশি বাচ্চা নষ্ট হচ্ছে মায়ের গর্ভেই।

নারীর অল্পবয়সে বিয়ে ও অপরিণত বয়সে গর্ভধারণকেই গর্ভের বাচ্চা নষ্টের অন্যতম মূল কারণ বলে মনে করেন চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার। তিনি আজাদীকে বলেন, কিশোরী বয়সে বিয়ে এবং অল্পবয়সে গর্ভধারণের কারণে গর্ভেই বাচ্চা নষ্টের ঝুঁকি বেশি। মায়ের অপুষ্টিজনিত কারণেও গর্ভের বাচ্চা নষ্টের আশঙ্কা থাকে। এছাড়া গর্ভধারণের পর মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, জন্ডিস, জ্বর, হরমোন সমস্যা ও ইনফেকশনসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণেও গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

হাসপাতালে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়া (এভরশন) সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা নারীদের মাঝে একটি বড় অংশ অল্পবয়সী বলেও জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও গাইনী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার।

গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের সেবাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি অবস্টেট্রিক (গর্ভধারণ ও গর্ভধারণ পরবর্তী) সেবা এবং অপরটি গাইনোলজিক্যাল (এভরশন, টিউমার, জরায়ু প্রভৃতি) সেবা। এভরশন বা গর্ভের বাচ্চা নষ্ট সংক্রান্ত সেবা গ্রহণের হার বিভাগটির গাইনোলজিক্যাল সেবার মধ্যে সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ।

গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে করণীয় বিষয়ে অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে হবে। মাকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। আর গর্ভধারণের আগে বা গর্ভধারণের সাথে সাথেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসেকর পরামর্শ মেনে চলতে হবে। তবেই এ ধরনের দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। মা ও গর্ভের সন্তান উভয়কেই সুস্থ রাখা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করে : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধআরেক আসামি চাঁদপুর থেকে গ্রেপ্তার