.
চকরিয়ার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী বাজারের পশ্চিমাংশে মাতামুহুরী নদীর তীরে জেগে উঠা চরে ব্যাপকভাবে চলছে দখলবাজি। গত একমাস ধরে তুমুল প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে ওই ভরাট হওয়া নদীর জায়গায় স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণসহ নানাভাবে দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এমনকি চলাচলের জন্য রাখা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গাও এই দখল থেকে রেহাই পায়নি।
এই অবস্থায় ভুক্তভোগী বৈধ লিজপ্রাপ্ত জমির মালিকদের কাছ থেকে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন গতকাল শনিবার দুপুরে ঝটিকা অভিযান চালায়। এ সময় এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনার কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বুলডোজার দিয়ে সেই অবৈধ স্থাপনা পুরোপুরি উচ্ছেদে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
সরেজমিন গতকার শনিবার দুপুরে বদরখালী বাজারের পশ্চিমাংশে গেলে দেখা যায়, সমুদ্র মোহনার মাতামুহুরী নদী তীরে ভরাট হওয়া জায়গা দখল করে সেখানে সারি সারি স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি দখলকৃত জায়গায় বালু ফেলে ভরাটও করা হচ্ছে। আবার সেই বালু শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে পাশের মাতামুহুরী নদী থেকে।
অভিযানে যাওয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাহাত উজ-জামান খান দৈনিক আজাদীকে বলেন, বদরখালী পুরাতন নৌ জেটিঘাটের দুই পাশে এবং মাতামুহুরী নদী তীরে ভরাট হওয়া বিপুল পরিমাণ জায়গা সরকারি এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। তাই যেসব জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে তার কিছু অংশ অপসারণ করে সেখানে সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে। অচিরেই এসব জায়গা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে বুলডোজার দিয়ে পরিকল্পিতভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। এরপরও যদি সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে কোনো কিছু করার চেষ্টা করা হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরো বলেন, কারা এই দখলবাজিতে লিপ্ত রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও যদি স্থাপনা তৈরির চেষ্টা করা হয় তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না কোনো দখলবাজকে।
এদিকে প্রাথমিক অভিযান শেষ করে এসি ল্যান্ড এবং পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল মনসুর চলে যাওয়ার পরপরই দখলবাজরা ফের তাদের অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা সরেজমিন প্রত্যক্ষও করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বদরখালীর একাধিক বাসিন্দা দৈনিক আজাদীকে বলেন, বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান এই দখলবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। তারা আপন শ্যালক-দুলাভাইও। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাহারা বসিয়ে দিনরাত সমানে এই দখলবাজিতে জড়িত রয়েছে তারা। আর তাদের সাথে আঁতাত করে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির কিছু নেতা এবং বেতনভুক্ত কিছু কর্মচারী দখলবাজিতে সহায়তা দিচ্ছেন।
তবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন জনি দাবি করেছেন, তারা সরকারি কোনো খাস জায়গা দখলবাজিতে সহায়তা করছেন না। অপরদিকে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান শ্যালক-দুলাভাই দাবি করেছেন, তারা সমিতি থেকে লিজপ্রাপ্ত হয়ে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। সেখানে সরকারি কোনো জমি নেই।












