পৌরসভা নির্বাচন ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের এ ঘোষণার পর থেকেই পটিয়ায় মেয়র পদে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী সরকার দলীয় চার নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় সাংসদ এবং জেলা-উপজেলার সিনিয়র নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন তারা। নৌকার টিকেট নিজের পক্ষে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এসব সম্ভাব্য প্রার্থী। ফলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চার হেভিওয়েট নেতা মাঠে নামায় শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্য খুলছে তা তা নিয়ে ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন গোলক ধাঁধায়। সাবেক মেয়র নাকি নতুন কোনো প্রার্থী নৌকার টিকেট পাচ্ছেন তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন ভোটার ও নেতাকর্মীরা। জানা যায়, আসন্ন পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার টিকেট পেতে ৪ হেভিওয়েট নেতা মাঠে কাজ করছেন। এরা হলেন- পটিয়া পৌরসভার দুইবারের মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি আ.ম.ম টিপু সুলতান চৌধুরী, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, দক্ষিণ জেলা শাপলা কুড়ি আসরের সভাপতি ও উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব বাবুল এবং পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্রীড়া সংগঠক মোহাম্মদ আলমগীর আলম। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে জানান, দল থেকে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। আমরা দলীয়ভাবে এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি। আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন। সৎ, যোগ্য ও জনগণের প্রত্যাশিত প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।
মনোনয় প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, বিগত ১০ বছরে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে গত পাঁচ বছরে এমজিএসপি প্রকল্পের ৭টি প্যাকেজে ৩৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, এডিপি তহবিলে ২৫টি প্যাকেজে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা এবং নিজস্ব তহবিলে ৬১টি প্যাকেজে ৬ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছি। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- পটিয়া নতুন থানা হাটে আধুনিক কিচেন মার্কেট নির্মাণ, ৫ কি.মি. ফুটপাত, ৭.৫০ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা কমেছে। সকল ওয়ার্ডের প্রধান সড়কসহ শাখা সড়কগুলো সংস্কার করেছি। এছাড়া সড়ক বাতি, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদসহ সকল সেবা কার্যক্রমের আধুনিকায়ন হয়েছে। তিনি পুনরায় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান হারুনুর রশিদ। পাশাপাশি শিশুপার্ক ও স্টেডিয়াম নির্মাণসহ পৌরবাসীকে বাসযোগ্য একটি পৌরসভা উপহার দেয়ার আশ্বাস দেন মেয়র।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএর সাবেক বোর্ড সদস্য আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী জানান, পটিয়া পৌরসভায় দিন দিন জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে। রাস্তাগুলো সরু। যত্রতত্র যানবাহন পার্কিং, অপরিচ্ছন্ন ও জলাবদ্ধতাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। সুতরাং দলের মনোনয়ন পেলে পটিয়া পৌরসভাকে মাস্টার প্ল্যানের আওতায় নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও শিশু সংগঠক আইয়ুব বাবুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন পেলে পটিয়া পৌরসভাকে একটি আধুনিক ও নান্দনিক শহরে রূপ দিব। এছাড়া আবদুর রহমান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ডাবল শিপ্ট চালু ও পটিয়া সরকারি কলেজে পূর্ণাঙ্গ মাস্টার্স কোর্স চালুসহ জনগণের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করব।
মনোনয় প্রত্যাশী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর আলম জানান, গত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তখন বর্তমান মেয়র এবারের নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার শর্তে আমি সরে দাঁড়িয়েছিলাম। ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করছি। দলের স্বার্থে অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েছি। দলের কঠিন সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে মামলা হামলার শিকার হয়েছি। দলের নীতি নির্ধারণী নেতৃবৃন্দ সবকিছু বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত রয়েছি।