মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি

নগরে পশুর হাট।। বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকার ভেতর।। লাল বাদশা'র মতো বড় গরুও কিনছেন কেউ কেউ

মোরশেদ তালুকদার | সোমবার , ২৬ জুন, ২০২৩ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

স্কুল শিক্ষক নাজিম। বড় ভাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ইকবালসহ গতকাল এসেছেন সাগরিকা পশুর হাটে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘুরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় কালো রঙের একটি মাঝারি সাইজের গরু কিনেন তারা। নাজিম আজাদীকে বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও চার ভাই মিলে কোরবানি দেব। বড় গরুর দাম বেশি, কেনার সামর্থ্য নেই। তাই মাঝারি সাইজের গরু কিনলাম।

গত কয়েকদিন ধরে নগরের বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ কোরবানিদাতার আগ্রহ মাঝারি সাইজের গরুর প্রতি। বেপারিদের কথায়ও এর সত্যতা মিলেছে। তারা জানান, মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। সেই চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বিক্রির জন্য বাজারে প্রচুর এ সাইজের গরু এনেছেন বেপারিরা। মোটামুটি মাঝারি সাইজের গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকার ভেতর।

মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা থাকলেও বড় গরুর বিক্রিও কিন্তু থেমে নেই। বাজারে প্রচুর বড় সাইজের গরু এনেছেন বেপারিরা। ৭ থেকে ৯ লাখ টাকা দামের গরুও আছে বাজারগুলোতে। গতকাল কয়েকটি বাজারে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা দামের গরু বিক্রি হয়েছে। মুসলিমাবাদ রোডের সিআইপি জসিমের খালি মাঠে বসা বাজারের ইজারাদার হারুনুর রশিদ আজাদীকে বলেন, বিক্রি বেড়েছে। কাল (আজ) থেকে আরো বাড়বে। আজ সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের গরু

বিক্রি হয়েছে। বাজারে ৭ লাখ টাকা দামের গরুও আছে। বাজারটিতে আসবে এমন গরুবাহী কোনো ট্রাক পথে রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন নেই। যা আসার চলে আসছে। বাজারে প্রচুর গরু আছে। বিবিরহাট বাজারের খাস আদায়ের সাথে জড়িতদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, গতকাল বাজারটিতে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা দামের গরু বিক্রি হয়েছে। মাগুরা থেকে নিয়ে আসা গরুটির নাম ‘লাল বাদশা’।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ কুমিল্লা থেকে গরুবাহী কয়েকটি ট্রাক আসবে এ বাজারে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ থেকেও গরু আসার কথা রয়েছে।

৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টি কে গ্রুপের খালি মাঠ বসা পশুর হাটে বসা ইজারাদার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বাজারটিতে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের একটি গরু বিক্রি হয়েছে।

সাগরিকা পশুর বাজারে সাহেদ নামে এক বেপারি জানান, গরু নিয়ে বাজারটিতে চার দিন আগে এসেছেন। এ পর্যন্ত ১২টি গরু বিক্রি হয়েছে। পর্যাপ্ত গরু থাকলেও ক্রেতা কম আসছে বলে দাবি করেন তিনি। গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গতবারের চেয়ে গরুর দাম সামান্য বাড়লেও তা মাত্রাতিরিক্ত নয় বলে দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, নগরে এবার স্থায়ীঅস্থায়ী ১০টি পশুর হাট বসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায়। এছাড়া চৌধুরী হাটের পশুর বাজার থেকে খাস আদায়ের মাধ্যমে হাসিল করা হচ্ছে। ওই হিসেবে ১১টি বাজার বসে চসিকের ব্যবস্থাপনায়। অস্থায়ী বাজারগুলো হচ্ছে কর্ণফুলী পশুর বাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট), ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টি কে গ্রুপের খালি মাঠ, ৪০ নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের পূর্ব হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ, একই ওয়ার্ডের মুসলিমাবাদ রোডের সিআইপি জসিমের খালি মাঠ, ২৬ নং ওয়ার্ডের বড়পোল সংলগ্ন গোডাউনের পরিত্যক্ত মাঠ এবং ৩ নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের ওয়াজেদিয়া মোড়। স্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে সাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট গরুর হাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার।

বাজারগুলোতে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, নাটোরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে গরু এনেছেন বেপারিরা। চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও বাঁশখালী থেকে আনা গরুও আছে। স্থানীয় বিভিন্ন খামারে হৃষ্টপুষ্টকৃত প্রচুর গরুও আনা হয়েছে বিক্রির জন্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাবাঘর তাওয়াফের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পরবর্তী নিবন্ধস্বামীর মুক্তিপণ দিতে গিয়ে স্ত্রীসহ তিন নারী অপহৃত