‘মা’ ডাকের মধ্যে একটা মায়া, ভালোবাসা, স্নেহ কতকি জড়িয়ে আছে। আমরা কি পারি ওই মা নামক মানুষটির সঠিক মর্যাদা দিতে? আমরা কি পারি সুষ্ঠভাবে তার যত্ন নিতে? যদি সত্যি আমরা পারতাম তাহলে হয়তো কোনো মাকে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নিতে হতো না। যে মানুষটা তার জীবনের সবটুকু দিয়ে আমাদের শূন্য থেকে এই পর্যায়ে এনে দাঁড় করিয়েছে আমরা কি তার সেই সব কিছুর মূল্য দিতে পেরেছি?
হ্যাঁ এটা ঠিক আমরা অনেকেই হয়তো মাকে টাকা পয়সা দিয়ে ভালো খাবার দিয়ে খুশি রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু মা কি তা চায়? মা চায় যে সন্তান কে সে দশ মাস দশ দিন গর্ভে লালন করে প্রসব বেদনা সহ্য করে এই পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ দিয়েছে সেই সন্তান যেনো তাকে একটু ভালোবাসা দেয় গাল ভরে মা ডাকে। আমদের যখন অসুখ হয় মা ছটফট করেন। হয়তো তার জীবনের বদলে যদি তার সন্তান সুস্থ হয় তবে সে তাই করবে। আমরা কি সেই মাকে একবারের জন্যেও দিন শেষে জিজ্ঞেস করি ‘মা তুমি কেমন আছো? তুমি খেয়েছো তো’?
আমরা বাবাকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকি সেভাবে মাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি না। মায়ের কথাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করি। মাকে ধমক দিয়ে কঠিন কঠিন কথা শুনিয়ে দেই। মা কিছু বারণ করলেও তার কথাকে তোয়াক্কা করি না। আমরা আমাদের মত চলি। একটা সময় এসে দেখা যায় আমরা প্রেমিক – প্রেমিকার কথার যেভাবে মূল্য দিয়ে থাকি মায়ের কথা তার একাংশ দিয়ে থাকি না। প্রেমিক– প্রেমিকারাই আমাদের জীবনের সব হয়ে দাড়াঁয় তখন। তারা যদি বলে তারা এক বেলা খাবে না আমরাও বলে দি তুমি না খেলে আমিও খাবো না। অথচ মা যদি তার শরীর খারাপের দায়ে এক বেলা না খেয়ে থাকে কই আমরা তো বলি না ” মা তুমি কেনো খাবে না? তুমি না খেলে আমিও খাবো না“। আমরা প্রেমিক প্রেমিকার প্রেমে অন্ধ হয়ে মরতেও দুবার ভাবি না। কিন্তু মায়ের জন্য একবেলা না খেয়ে থাকাও আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আমরা আমাদের মায়ের ওপর এত ভূল করি তাও মায়ের তার সন্তানের ওপর কোনো অভিযোগ নেই। সুতরাং এখনো সময় আছে, যাদের মা আছে আমরা সন্তানেরা সেই মাকে একটি গুরুত্ব দেই একটু ভালোবাসি। হয়তো আমাদের এই ভালোবাসার ছোঁয়ায় মা আমাদের যে পরম স্নেহে বড় করেছেন সে সব ভেবে হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা। আমরা সন্তানেরাও থাকি মায়ের বুক জুড়ে। বৃদ্ধাশ্রম যেনো কোনো মায়ের শেষ বয়সের মাথা গুজার ঠাঁই না হয় সে প্রত্যাশা রাখি সকলের কাছে।