মাই সেন্টমার্টিনে বদলে গেল প্রবাল দ্বীপ

টেকনাফ প্রতিনিধি | শনিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

অসঙ্গতি বা অভ্যাস পরিবর্তনে একটি কার্যকরী উদ্যোগই যে যথেষ্ট তা দেখিয়ে দিল ‘মাই সেন্টমার্টিন’। এক সময় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ছিল প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্যময়। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত পর্যটকের পদভার, অব্যবস্থাপনা এবং সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় দ্বীপের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে। দ্বীপের সৈকত, বীচের পাড়, প্রধান সড়ক, বাজারসহ যত্রতত্র বর্জ্য, ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। একটি বিপর্যস্ত একটি দ্বীপে পরিণত হয় সেন্টমার্টিন। এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ রূপে বদলে দিয়েছে ‘মাই সেন্টমার্টিন’ নামের একটি প্রকল্প। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট সেন্টমার্টিন ইউএনডিপি নির্বাহী কমিটি কয়েকমাস আগে শুরু করে দ্বীপ সুরক্ষা কার্যক্রম।

এতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা এগিয়ে আসে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও ইউএনডিপি। প্রকল্পের কোর্ডিনেটর কামাল উদ্দিন বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে ১৬ জন কর্মী ও ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিনরাত দ্বীপের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন। এরমধ্যে একজন কোঅর্ডিনেটর, একজন সুপারভাইজার, দুই জন নারী ও ১২ জন পুরুষ কর্মী দ্বীপের বর্জ্য, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, দ্বীপের চতুর্পাশ কেয়া বৃক্ষরোপণ, মেয়েদেরকে সচেতন করা ও ১৬ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হাতে কলমে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে ইউএনডিপি এক্সিলারেটর ল্যাব (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) প্রধান ড. রমিজ উদ্দিন বলেন, গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঘুরে বীচসহ বিভিন্ন স্থানে যে ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ দেখা গিয়েছিল তা কিন্তু ডিসেম্বর মাসে এসে তার উল্টো দেখা গেছে। বীচে বা বাজারে যত্রতত্র বর্জ্য বা অন্যান্য ময়লা আবর্জনা চোখে পড়েনি। তিনি আরও জানান, একটি আন্তরিক উদ্যোগ যে কতটা পরিবর্তন বা অভ্যাস বদলে দিতে পারে তা সরেজমিনে না গেলে বুঝতে পারবে না কেউ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেখানে সেখানে প্লাস্টিক জাতীয় ময়লা না ফেলার জন্য শতাধিক বিন স্থাপন করা হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে। বর্তমানে সংগ্রহ করা প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো অস্থায়ী ডাম্পিংয়ে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। যার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন দারুণভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখতে পেরেছি বলে দাবি করেছেন প্রকল্প সুপারভাইজার মোঃ জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের সঠিক নেতৃত্বে দ্বীপের পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়েছে। সময়ে সময়ে চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান নিজেই দ্বীপের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন। মাই সেন্টমার্টিন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান মুজিবুর রহমান বলেন, জনগণের দেওয়া অর্পিত দায়িত্ব অনেক করতে গিয়ে আগে দ্বীপের পরিবেশ সুরক্ষাকে প্রধান কাজ হিসেবে মনে করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে মা ছেলে গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপলাতক স্ত্রী গ্রেপ্তার