মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা স্যাবোট্যাজ করছে দাবি করে তাদের প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ–এর আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী বিবৃতির বিষয়টি বিডিনিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৬৮ জন। ওই দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ছয় দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকে তারা দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখে।
বিবৃতিতে হেফাজতের নেতারা শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি সমর্থন করে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো শুধু মেনে নেওয়াই নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে বাস্তবায়ন করেও দেখাতে হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ঢুকে নিষিদ্ধ লীগের সন্ত্রাসীরা স্যাবোট্যাজ করার ঘটনায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। যে কোনো মূল্যে দল–মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লীগের সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে আমরা আপামর ছাত্র–জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আর যারা গোপনে দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে এবং লুটের টাকার ভাগ পেতে আঁতাত করে লীগের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে, তারা জনগণের কাছে অচিরেই প্রত্যাখ্যাত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার নিষিদ্ধ লীগের সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তারা বলেন, এক বছর হয়ে গেলেও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের অনেকে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো পদক্ষেপ জারি রাখতে না পারার কারণে তারা ছদ্মবেশে স্যাবোট্যাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। কারণ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে চরম ব্যর্থ হয়েছে ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বিবৃতিতে বলা হয়, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির দায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এড়াতে পারে না। শুধু শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগই নয়, বিমানবাহিনীর প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদেরও পদত্যাগ করতে হবে। উত্তরার মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কীভাবে একটি ত্রুটিপূর্ণ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উড়তে পারে এর জবাব সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দিতে হবে। আমরা দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে রাখতে পারি না।