অব্যাহত রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের নগরসেবায় ক্যারাভান কর্মসূচি। গতকাল সল্টগোলা ক্রসিং থেকে পুরাতন ডাকঘর ২নং সাইট বাকের আলী ফকিরের ও চৌচালা মোড় পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি। এসময় প্রশাসক বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা চিহ্নিত করে তার তাৎক্ষণিক সমাধান করেন। প্রশাসকের সাথে থাকা পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে মশার ওষুধও ছিটান। বিলি করেন সচেতনতামূলক প্রচারপত্র ও মাস্ক।
কর্মসূচি চলাকালে মাইজপাড়া এলাকায় ড্রেনের উপর দোকান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এসময় নিজ উদ্যোগে দোকানগুলো সরিয়ে নিতে তিনদিনের সময় দেন। অন্যথায় চসিকের ভ্রাম্যমাণ আদাতের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। আনন্দ বাজার এলাকায় রাস্তার উপর বাজার দেখেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তখন বাজার না বসাতে বাজার কমিটিকে নির্দেশ দেন। চৌচালা মোড়ে রাস্তার অবস্থা ছিল খারাপ। অভ্যন্তরীণ সড়কটি দিয়ে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান সহ ভারী যানবাহন চলায় বেহল দশা হয়েছে বলে স্থানীয়রা প্রশাসককে জানান। সেখানে ড্রেনও প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। তাই দেখে প্রশাসক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন প্রকৌশল বিভাগকে।
এছাড়া লোহার পুল, নিশ্চিন্তা পাড়া, মিস্ত্রি পুকুর পাড়, মহাজন পাড়া, পুরাতন ২ নম্বর সাইড, সাচী চৌধুরী পাড়া, বরহান পাড়া, আলী মিয়া সরকার বাড়ি এলাকার অধিবাসীদের সাথে কথা বলেন। জানতে চান তারা কর্পোরেশন থেকে ঠিকঠাকভাবে সেবা পাচ্ছেন কিনা। এসময় বরহান পাড়া, আলী মিয়া সরকার বাড়ির সড়কটি নীচু হওয়ায় বৃষ্টির মৌসুমে জলামগ্ন থাকে বলে স্থানীরা অভিযোগ করেন। তখন প্রশাসক শীঘ্রই কর্পোরেশনের উদ্যোগে উঁচু ও পাকা করার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন।
কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন স্থানে হ্যান্ড মাইকে বক্তব্য দেন খোরশেদ আলম সুজন। এসময় তিনি করোনার এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে খাল-নালায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান নাগরিকদের। তিনি বলেন, আসন্ন শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে সংক্রমণ বাড়তে পারে। অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ে। তাই করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। নিজ বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুর, ডোবা আশাপাশের নালা-খাল পরিষ্কার রাখতে হবে। যাতে মশার উপদ্রব না বাড়ে। পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব মেনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানের পাশাপাশি কিছুক্ষণ অন্তর সাবান পানিতে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই শহর আমাদের তাই একে নান্দনিক, পরিবেশ বান্ধব করে রাখতে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। প্রশাসক করোনার ঠিকা দেশে সহজলভ্য না হওয়ায় পর্যন্ত নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সামান্য অবহেলায় নিজের ও জনজীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই সাবধানতা অবলম্বনের বিকল্প নাই।
মহেশখাল পরিদর্শন : কর্মসূচি শুরুর আগে আগে প্রশাসক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসনে হালিশহর সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে মহেশখালের মুখে রেগুলেটর পয়েন্ট স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করেন। এই রেগুলেটর স্থাপনে চউকের ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এবং জলাবদ্ধতা থেকে দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকায় জনসাধারণ রক্ষা পাবে। এ কাজ পরিদর্শনকালে চউকের চলমান প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শাহ আলী উপস্থিত ছিলেন।