মহেশখালীতে নির্বিচারে প্যারাবন নিধন, ২৬ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা

মহেশখালী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৯ জুলাই, ২০২৪ at ১১:১৯ অপরাহ্ণ

মহেশখালীর শত-শত একর প্যারাবন কেটে লবণের মাঠ, চিংড়িঘের ও মাছের প্রজেক্ট করেছে প্যারাবন খেকোরা। সরকারি এসব জমি দখল করার অভিযোগে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক সোলায়মান হায়দার।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বাদি হয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এই মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী।

সূত্রের তথ্যমতে, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় প্রায় ৫৬২ একর জায়গায় গত জানুয়ারি থেকে দিনেরাতে বিভিন্ন সময়ে প্যারাবন কর্তন, বাঁধ নির্মাণ, চিংড়ি ঘের ও লবন মাঠ তৈরি করে আসছিলো একটি প্যারাবন খেকো সিন্ডিকেট।

তারা প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন মহেশখালীর (ইসিএ) এলাকা সোনাদিয়া উপদ্বীপ এবং কুতুবজোমের ঘটিভাঙ্গা মৌজার ৪৯১৬ হেক্টর এলাকার (ইসিএ) অন্তত ৭টি জায়গায় হাজার হাজার বাইন, কেঁওড়া, কেয়া গাছের প্রাকৃতিক বন (ম্যানগ্রোভ) কেটে সেখানে বাঁধ নির্মাণ করে সরকারি জমি দখল করেছে।

এই ভূমিদস্যুদের ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও ১০ থেকে ১৫ জনের নাম অজ্ঞাত রেখে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এই মামলার আসামিরা হলেন, সোনাদিয়ার ২নং ওয়ার্ডের খলিলুর রহমানের পুত্র সাবের আহমেদ (৪৮), বড় মহেশখালীর ফকিরাঘোনার মৃত আনোয়ার পাশা চৌধুরীর পুত্র মহসিন আনোয়ার (৫০), ঘটিভাঙ্গার ওসমান আলী (৬১), মহেশখালী উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি জসিম উদ্দীন (৪০), মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল করিম (৪৫), ঘটিভাঙ্গার মৃত নেজাম আলীর পুত্র রবিউর আলম (৪২), সোনাদিয়া পূর্বপাড়ার মোজাফর আহমেদের পুত্র মো: ফারুক (৪১), জাহাঙ্গীর আলম (৪২), জাফর আলম (৬০), মো: তারেক (৩৫), আমিরুজ্জামান (৬২), সাজ্জাদুল করিম (৩৮), কুতুবজোমের সাবেক মেম্বার নুরুল আমিন খোকা (৪১), বর্তমান মেম্বার মোঃ ছিদ্দিক রিমন (৩৯), শাহাদাত কবির (৪৫), সোনামিয়া (৩৭), সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন (৬২), শহিদুল্লাহ সিকদার (৬৮), মো: নেজাম (৪৩), আমির হোসেন (৫৪), নাসির উদ্দিন (৫০), শফি আলম (৪৫), মো: আলম শরিফ (৪৭), জয়নাল আহমদ (৪৫),  আমির হোসেন কোম্পানি (৪৮) ও আজিজুল হক (৪৬)।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক সোলায়মান হায়দার দৈনিক আজাদীকে বলেন, মহেশখালীর কুতুবজোম, সোনাদিয়ার বিভিন্ন স্থানে সরকারি ভূমির প্যারাবন নিধন করে চিংড়িঘের, লবণের মাঠ, মাছের প্রজেক্ট করে আসছিলো স্থানীয় ব্যক্তিরা।

সরেজমিন পরিদর্শন করে এই প্যারাবন নিধনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি মামলার এজাহার মহেশখালী থানায় জমা দিয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

পরিবেশ অধিদপ্তর ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে রোগী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ