কক্সবাজার উপকূল সংলগ্ন পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আবারো জলদস্যুদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে অন্তত ৩/৪টি ফিশিং ট্রলার। গত মঙ্গলবার মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ জলদস্যুকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি দেশীয় লম্বা বন্দুক ও একটি ফিশিং বোট জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালী এলাকার নুর মোহাম্মদের পুত্র আবদু রশিদ, হোয়ানক ইউনিয়নের মোহরাকাটা এলাকার মোহাম্মদ সেলিমের পুত্র আশেক, বড় মহেশখালী ফকিরাঘোনা এলাকার নুরুল হাসেমের পুত্র মিজান এবং মকবুল আহমদের পুত্র জামাল।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কুতুবজুম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা ঘাট এলাকায় কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তারা বুঝতে পারেন, এগুলো জলদস্যু দলের সদস্য হতে পারে। একপর্যায়ে জনতা গোপনে তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে এবং দেখতে পায়, তারা একটি ফিশিং বোটে অবস্থান করছে এবং সঙ্গে রয়েছে একটি দেশীয় বন্দুক। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়রা দলবদ্ধ হয়ে দস্যুদের ঘেরাও করে ফেলে। পালানোর চেষ্টা করলেও জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা ব্যর্থ হয়। এরপর উত্তেজিত জনতা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের হেফাজতে নেয়। এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি কাইছার হামিদ বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে জনতার হাতে ৪ জলদস্যু আটকের পর একই দিন আবারো বঙ্গোপসাগরে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় জলদস্যুদের হামলায় ৪ মাঝিমাল্লা আহত হয়েছেন। ফিশিং ট্রলার মালিক মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের খোন্দকারপাড়ার এরশাদ উল্লাহ বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে বঙ্গোপসাগরের জাহাজেরখাড়ি নামক এলাকায় জাল ফেলে মাছ শিকাররত তার ফিশিং ট্রলারে ২০ থেকে ২৫ জনের একদল জলদস্যু হানা দেয়। দস্যুরা ট্রলারে উঠে জেলেদের মারধর করে মাছ, জাল ও ট্রলারে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ প্রায় ৪/৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় জলদস্যুরা জনতা কর্তৃক তাদের ৪ সদস্যকে ধরে পুলিশে দেওয়ার প্রতিশোধ নেওয়া এবং তাদের ছাড়িয়ে নেওয়ার খরচ তুলতেই পুনরায় ডাকাতি করছে মর্মে মাঝিমাল্লাদের হুমকি দেয়। এই বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি মোহাম্মদ কাইছার হামিদ বলেন, ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তারপরও সাগরে জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে তিনি কোস্টগার্ডের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।