মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি কারও কাম্য নয় : জেলা প্রশাসক

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে : সিভিল সার্জন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১১ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী ও অন্যান্য স্থান অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ফলে এটি হয়েছে। তবে মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি কারও কাম্য নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি যাতে ভবিষ্যতে আর না হয় সে ব্যাপারে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে।

গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সমপ্রতি নগরীর হাজারী গলিতে একটি ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবসায়ীদের নিয়ে মিটিং করে সমস্যা সমাধান করতে চাই। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আটককৃত অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি ও ডকুমেন্ট মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন গাড়ি ডাম্পিং করার জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, উত্তর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই উপজেলার কোন জায়গায় ডাম্পিং স্টেশন করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জায়গা খুঁজে জেলা প্রশাসনের কাছে তালিকা দিলে তা যাচাইবাছাই করা হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, রাহাজানি, নারী ও শিশু নির্যাতন, রেল থেকে তেল পাচার, রেলপথ, নৌপথ ও সড়ক পথে মাদক পাচার রোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ এবং বন্য হাতির উপদ্রব থেকে জানমাল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

সভায় জেলার পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি শেষে থানাগুলোকে ঢেলে সাজিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা মতে পুলিশ কাজ করছে। ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডসহ অন্যান্য অংশে চুরিডাকাতিছিনতাই রোধে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সড়কে যানজট নিরসনে অনেকে ট্রাফিকের নির্দেশনা মানতে চায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে এবং ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এসপি বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী থেকে জেলার বিভিন্ন থানা থেকে বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুঠ হয়েছে, কিছু কিছু উদ্ধার হয়েছে, যে সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি সেগুলো উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর বাহিনীর অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন দেশের ৬৩ জেলা ও মহানগর পর্যায়ে যারা নাশকতা ও হামলা চালিয়েছে তাদের মধ্যে যারা গ্রেফতার হয়েছে সর্বাধিক ১ থেকে ৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা। সঠিক ঘটনায় থানায় মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করবে না। তবে যারা ঘটনার সাথে জড়িত নয়, তাদেরকে মামলায় যুক্ত না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত তিন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩০৪ জন, আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৩২ জন, চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৪৭ জন ও গত অক্টোবর মাসে আক্রান্ত ছিল ১ হাজার ৪৩০ জন, মৃত্যুবরণ করেছে ৯ জন এবং চলতি মাসের ৯ নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত ৩৬৯ জন ও মৃত্যুবরণ করেছে ৭ জন। বিগত ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল ২ হাজার ৭৭৯জন, মৃত্যুবরণ করেছিল ১২ জন এবং নভেম্বর মাসে (২০২৩ সাল) ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল ১ হাজার ২৫৪ জন ও মৃত্যুবরণ করেছিল ১৬ জন। আক্রান্তরা সরকারিবেসরকারি হাসপাতালক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সৈয়দ মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন, মেট্রো এনএসআই’র উপপরিচালক নূর মোহাম্মদ, র‌্যাব৭ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল, কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের প্রতিনিধি লে. শাকিব মেহবুব, জেলা এনএসআই’র সহকারী মো. রেজাউল করিম, আনসারভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. আবু সোলায়মান প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজমিদার বজলুল করিম চৌধুরীর পুত্র আরিফ উল করিম চৌধুরীর ইন্তেকাল
পরবর্তী নিবন্ধসবাই জ্যামের সম্মুখীন, সমাধান কী ভাবে