শারদ আবহ চারিদিকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বছরব্যাপী অপেক্ষার পালা শেষ। মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা। ধূপ-ধুনুচি, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি আর ঢাকের তালে সায়ংকালে মণ্ডপের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। মণ্ডপ আর মন্দিরগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে ভক্তদের আরাধনায়।
এদিকে পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ শুক্রবার ভোর ৬টা ১০ মিনিট ২০ সেকেন্ড থেকে মহাসপ্তমী শুরু। গতকাল মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠী বিহিত পূজা প্রশস্তা ও সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনার কারণে দুর্গাপূজায় উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। তবে এ বছর দুর্গাপূজা শুরুর মাসটি (আশ্বিন) ‘মল মাস’ তথা ‘অশুভ মাস’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় হেমন্ত ঋতুর কার্তিক মাসে এই পূজার আয়োজন হচ্ছে। মল মাসে পূজা-অর্চনা কিংবা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় না। একই কারণে প্রতি বছর মহালয়া তথা দেবীপক্ষ শুরুর সাতদিন পর পাঁচদিনের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটলেও এবার ব্যতিক্রম ঘটছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া আয়োজিত হলেও এবারে দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে দেবীপক্ষের সূচনার ৩৫ দিন পার করে। সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসছেন। যার ফল হচ্ছে মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। দেবী স্বর্গালোকে ফিরে যাবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হিসেবে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণা হয়ে উঠবে।
হিন্দু সমপ্রদায়ের প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন এবং দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সব নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারিতে তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সমপ্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।