মহামারী নিয়ন্ত্রণে করণীয় নিয়ে বৈঠকে বসছে সরকার

| মঙ্গলবার , ২৭ জুলাই, ২০২১ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

মহামারীর দেড় বছরের মধ্যে দেশে এখন সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন দিয়ে রাখলেও সংক্রমণ-মৃত্যু কোনোটিই কমছে না। এই পরিস্থিতিতে করণীয় কী, তা ঠিক করতে গুরুত্বপূর্ণ এক সভায় বসছে সরকার। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে। তিনি বলেন, কালকে আমরা মিটিং করব। আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে বড় মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। দেশে দৈনিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু দুটো ক্ষেত্রেই রেকর্ড গড়ার দিনে এই সিদ্ধান্ত জানালেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল জানায়, এদিন সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ড ১৫ হাজার ১৯২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত এবং ২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার ডেল্টা সংক্রমণে গত কয়েক মাস ধরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও এক দিনে এত আক্রান্ত ও মৃত্যু বাংলাদেশ আগে দেখেনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১ জুলাই দেশে লকডাউন জারি করা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে কোরবানির ঈদের সময় নয় দিন তা শিথিল করা হয়েছিল। ঈদের ছুটির পরেই সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড হলো। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আগস্ট মাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ ৫ আগস্ট পর্যন্ত চালানোর ঘোষণা রয়েছে। সংক্রমণ কমাতে বিশেষজ্ঞরা লকডাউনের পক্ষে বললেও তা আবার মানুষকে জীবিকার সংকটে ফেলছে, সেটাও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে। এই দোটানার মধ্যে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে কিনা- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তা মঙ্গলবারের সভায়ই ঠিক হবে। ‘বড়’ সভা বললেও এই সভায় কারা কারা থাকছেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, সংক্রমণ যে গতিতে ছড়াচ্ছে, তাতে এখন কঠোর বিধিনিধেষের কোনো বিকল্প নেই।
কয়েক মাস আগে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের অবস্থা করুণ হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশে হাসপাতালে শয্যা এখনই পাওয়া কঠিন হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সেদিকে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছেন সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালের সিট বাড়িয়ে, ডাক্তার বাড়িয়ে এগুলো (করোনাভাইরাস) নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ইউরোপের দেশগুলো দেখেন, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, জার্মানি। জার্মানিতে তো অসহায় হয়ে পড়েছিল। ইন্ডিয়ার অবস্থা দেখেন, কী হয়েছে। একমাত্র মানুষ যদি মাস্ক না পরে, (সামাজিক) দূরত্ব না মানে, ইট উইল বি অলমোস্ট ইমপসিবল। মক্কা-মদিনা দেখেন, মদিনার ভেতরে ৩ ফিটের মধ্যে কাউকে আসতে দেবে না। মক্কাতে আপনি খেয়াল করে দেখেছেন কিনা, নামাজ বা তাওয়াফ করে, কী রকম ডিসিপ্লিন মেনে চলছে মানুষ। সেজন্যই সৌদি আরব নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।
এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমার সাথে গতকালকেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজির কথা হয়েছে। অফিসগুলোর কিছু মেশিন চালু রাখতে হয়। ওই টেকনিক্যাল (কর্মী) যায়-আসে। অনেক জিনিস আছে, সার্ভিসিং করতে হয়, এগুলো তারা করছে। এগুলো আমাদের মোবাইল কোর্ট চেকিং করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে উকিল নোটিস
পরবর্তী নিবন্ধএ কেমন চাচা!