সোনার গয়না বন্ধক রেখে গত বছর ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছিলেন পল ফার্নান্দেজ। কিন্তু এ বছর সেসব গয়না তাকে ছেড়েই দিতে হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
ভারতের গোয়া উপকূলের ৫০ বছর বয়সী এই প্রৌঢ় এক প্রমোদ তরীতে ওয়েটারের চাকরি করতেন। মহামারীর মধ্যে গত বছর তার চাকরি চলে যায়। এরপর আর চাকরি জোটাতে পারেননি। নিজে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করেও বিফল হয়েছেন। তিনি বলেন, সোনার গয়না বন্ধক রেখে যে টাকা পেয়েছি সে তো শেষ পর্যন্ত একটি দেনাই। গয়নাগুলো বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আর সুদ গুণতে হবে না। সোমবার এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারীতে অভবে পড়ে পল ফার্নান্দেজের মত ভারতের কোটি নাগরিক তাদের শেষ সঞ্চয় সোনার গয়নাগুলো বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সোনার গয়না ভারতে কেবল সাজসজ্জার উপকরণ নয়, বিভিন্ন আয়ের মানুষের সঞ্চয়ের একটি জন প্িরয় মাধ্যম। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রামের মানুষই সেখানে সোনার গয়নার সবচেয়ে বড় ক্রেতা। করোনাভাইরাসের মহামারীতে ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতিই সবচেয়ে খারাপ দশায় পড়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাংক কম বলে অভাবের তাড়নায় গতবছর অনেকে গয়না বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সংক্রমণের দ্বিতীয় ফেউয়ের পর তারা তা বিক্রি করে দিচ্ছেন।
লন্ডন ভিত্তিক মেটালস ফোকাস লিমিটেডের উপদেষ্টা চিরাগ শেঠের মতে, ভারতে যদি সংক্রমণে তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়, তাহলে বিক্রির চাপে ‘গিনি বা কাঁচা সোনার’ মোট সরবরাহ বেড়ে গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২১৫ টনে উঠতে পারে। ভারতে আমদানি করা সোনার বড় অংশই আসে সুইজারল্যান্ড থেকে। এখন দেশের ভেতরে হাতে থাকা গয়না বিক্রি বেড়ে গেলে আমদানি কমে যাবে।
লকডাউনের পর দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। আপনি দেখবেন গয়নার দোকানে লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। তার দুটি কারণ: একটি হল বিয়ের মৌসুম, লোকজন কিনতে যাচ্ছে; আর দ্বিতীয়ত নগদ অর্থের জন্য মানুষ গয়না বিক্রি করতে যাচ্ছে। অর্থনীতির অবস্থা খাপার হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই ভারতীয়দের সোনার গয়না কেনা কমেছে।