মহাবিপন্ন প্রজাতির বানর হত্যার প্রতিবাদে মহেশখালীতে মানববন্ধন

| রবিবার , ৭ নভেম্বর, ২০২১ at ৩:১৯ অপরাহ্ণ

মহেশখালীতে মহাবিপন্ন প্রজাতির বানর হত্যার প্রতিবাদে ‘বাঁচাও জীববৈচিত্র্য, বাঁচাও পৃথিবী’ স্লোগানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও মানববন্ধন কর্মসূচি সহ স্থানীয়দের মাঝে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গত ৫ নভেম্বর কর্মসূচি পালন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘১\২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট’।

সকালে বানর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্থানীয়দের মাঝে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সাধারণ জনগণের ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করে, বিকেলে মহেশখালী উপজেলা চত্বরে প্রতিবাদ সভা এবং সরকার ও বনবিভাগের কাছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর কঠোর প্রয়োগের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্বে ছিলেন সেভ দ্যা ন্যাচার বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান আ.ন.ম. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের এনভায়রমেন্ট উইং লিডার রুমানা রিফাত রিমকি।

এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি লায়ন জামাল উদ্দিন, সেভ দা ন্যাচার বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বাংলাদেশ পরিবেশন আন্দোলন (বাপা), মহেশখালী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশে ছাত্র ইউনিয়ন মহেশখালী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স প্রান্ত, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১১ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার সময় মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর ভারিতিল্লা পাহাড়ি ঘোনা যা মুদিরছড়া বন বিটের অধীনস্থ পাহাড় মহেশখালী মৌজায় মহাবিপন্ন প্রজাতির শতাধিক কুলু বানর/শুকর লেজি বানরকে(Northern pig-tailed Macaque) কলার সাথে বিষ মাখিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরিকল্পিতভাবে একসাথে এতগুলো বন্যপ্রাণী হত্যা যা এদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্যপ্রাণী হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

এ ঘটনায় মুদিরছড়া বিট কর্মকর্তা অঞ্জন কান্তি বিশ্বাস বাদী হয়ে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-এর ৩৯ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করেন গত এতে গত ১৭ অক্টোবর। অথচ এখনও পর্যন্ত মামলার কোনো অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাছাড়া বন বিভাগের করা মামলাতে ভিন্ন প্রজাতির বানর Macaca Mulatta বলে উল্লেখ করা হয়েছে যার ফলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সাথে এই অঞ্চলে বিচরণ করা বানরের প্রজাতির ভিন্নতা থাকায় এই হত্যাকাণ্ড প্রমান করা অসম্ভব।

তাই চিহ্নিত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী গবেষক দ্বারা এই বানরের প্রজাতি তাদের প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করে আর্জি সংশোধন করার বক্তারা জোর দাবি জানান।

মহেশখালীর জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য ‘১\২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট’-এর দাবিগুলো হলো ১/এই অঞ্চলের সকল জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় অবিলম্বে মহেশখালীর ইকোসিস্টেম রক্ষা, ২/এই অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা উপযোগী খাদ্য শৃঙ্খল গড়ে তোলা এবং আম, আনারস সহ বন্য ফল গাছ অধিক হারে রোপণ, ৩/সরকারের অনুমতি ব্যতীত বন্যপ্রাণীদের উপর কোনো গবেষণা না করা, ৪/এই অঞ্চলের পরিবেশ-জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস বা আকাশমণি বৃক্ষ রোপণ না করা, ৫/এই অঞ্চলের জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় ছুরিকাঘাতে বৃদ্ধ নিহত
পরবর্তী নিবন্ধচমেকে গুলিবিদ্ধ কক্সবাজার শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু