মহাপরিচালক নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি, দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান

পটিয়া আল জামিয়া মাদরাসার শূরা বৈঠক

পটিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামী মাদরাসার মাদরাসার সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা ওবায়দুল্লাহ্‌ হামযার পদত্যাগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ও বিরোধ অবশেষে নিষ্পত্তি হলো। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলা শূরা কমিটির এক বৈঠকে মাদরাসার সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের ফলে এ বিরোধের অবসান ঘটে। মাদ্রাসায় শূরা কমিটির বৈঠক নিয়ে গতকাল বুধবার দিনভর মাদরাসা ঘিরে প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ছিল উদ্বেগউৎকণ্ঠা। সকাল থেকে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের আশপাশে অবস্থান নেয়। এসময় পটিয়া থানা পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নেয়। শূরা বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হচ্ছে তা জানতে মাদরাসার আশেপাশে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আগাগোনা ছিল অনেক বেশি।

এর আগে গত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর সাবেক মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ্‌ হামযার পদত্যাগের দাবিতে রাতভর ছাত্র বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুরসহ বিভিন্ন বিষয়ে মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শুভাকাক্সখীদের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়। যার ফলে মাদরাসার পড়ালেখার পরিবেশ ও দীর্ঘদিনের শান্ত ও সুন্দর পরিবেশে অস্থিরতা দেখা দেয়। একদিকে সাবেক মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযাকে মাদরাসায় ফিরিয়ে আনতে একটি পক্ষ নানা তদবির শুরু করে। অন্যদিকে মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষক ও ছাত্ররা ওবায়দুল্লাহ্‌ হামযার পদত্যাগ ও তাকে মাদরাসা থেকে বিতাড়িত করতে ফুঁসে উঠে। এর ফলে দীর্ঘ ৩ মাস ধরে মাদরাসায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

যার কারণে মাদরাসার পরিচালনা নিয়ম অনুযায়ী গতকাল বুধবার দুপুরে শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী পুরাতন শূরার ১৫ জনের মধ্যে ৮ জনসহ ১৯ জন সদস্যের উপস্থিতিতে মোট ২৭ জন আলেমের মতামতের ভিত্তিতে মাদরাসার চলমান সংকট উত্তরণে গৃহীত সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছদরে মুহতামিম (মাদরাসার সভাপতি) হিসেবে নিযুক্ত শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ আহমদুল্লাহ, মুহতামিম (পরিচালক) শায়খুল হাদিস আল্লামা আবু তাহের নদভী, সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে মাওলানা ওসামা হারুনের নাম ঘোষণা করেন। এছাড়াও বর্তমান পরিচালক আগামী শূরায় নায়েবে মুহতামিম এবং মুইনে মুহতামিমের নাম প্রস্তাব করবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, হাটহাজারী মাদরাসার পরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী, নানুপুর ওবাইদিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা সালাহ উদ্দিন, জিরি মাদরাসার পরিচালক মুফতি খোবাইব, শুলকবহর মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা হারুন, শূরা সদস্য ও ফেনী সর্সদী মাদরাসার মুফতি আফজালুর রহমান, পটিয়া রাজঘাট মাদরাসার পরিচালক মাওলানা হাবিবুল ওয়াহেদ, পটিয়া মাদরাসার পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা আবু তাহের নদভী, পটিয়া মাদরাসার প্রধান মজলিসে এদারী হাফেজ আহমদ উল্লাহ্‌, পটিয়া মাদরাসার মুফতি ও মুহাদ্দিস সামসুদ্দীন জিয়া, মাওলানা জাহেদ উল্লাহ, আন্‌জুমানে ইত্তেহাদুল মদারিসের মহাসচিব মুফতি একরাম হোসেন, ব্যবসায়ী হাজী এনাম, পটিয়া উম্মে হালিমা মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুর রহিম চৌধুরী, পটিয়া মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা জসিম উদ্দিন, ব্যবসায়ী মাওলানা আমান উল্লাহ, বগুড়া জামিল মাদরাসার নির্বাহী পরিচালক মাওলানা আব্দুল হক হক্কানি, মাসিক আল আবরার সম্পাদক মাওলানা রিজওয়ান জমিরাবাদী, দোহাজারী আজিজিয়া কাশেমুল মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি আশেক প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীর মিষ্টি পানের জিআই স্বীকৃতির আবেদন করা হচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধউপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে বিএনপির ভেতরে যেসব আলোচনা