মহাপরিচালক নিয়ে দ্বন্দ্ব, দুই পক্ষ মুখোমুখি

পটিয়ার আল জামিয়া মাদ্রাসা সমস্যা সমাধানে আজ বৈঠক

পটিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

পটিয়ার আল জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। মাদ্রাসার ‘মহাপরিচালক’ মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার বিরোধী গ্রুপ ভেতরে এবং তার পক্ষের গ্রুপ পটিয়া কলেজ মাঠে অবস্থান নেয়। এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কায় গতকাল সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পটিয়া থানা পুলিশ ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মহাসড়কের ডাকবাংলো, মাদ্রাসা গেট ও পটিয়া সরকারি কলেজ মাঠে অবস্থান নেয়।

গতকাল সকাল থেকে মাদ্রাসায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছাত্রশিক্ষক ওবায়দুল্লাহ হামযার বিরুদ্ধে মাইক লাগিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে অবস্থান নেয়। পুলিশ গিয়ে তাদের মাইক খুলে ফেলতে অনুরোধ করে। তারা মাইক নামিয়ে ফেলে।

অপরদিকে মাদ্রাসায় হামলার প্রতিবাদ, তদন্তপূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ইত্তেহাদের সংবিধান অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিক শূরায়ী নিজাম বহাল এবং ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মজলিসে শূরার সিদ্বান্ত বাস্তবায়নের দাবিতে হামযার পক্ষে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে শত শত ছাত্রশিক্ষক পটিয়া কলেজ মাঠে অবস্থান নেন। এতে সাতকানিয়ার এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভী এমপিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়। ২৮ অক্টোবর রাতে মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ ওঠে একটি পক্ষের বিরুদ্ধে। পরদিন সকালে মহাপরিচালকবিরোধী পক্ষ তাকে মাদ্রাসা থেকে টেক্সিযোগে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে মাদ্রাসায় মহাপরিচালক নিয়ে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়। মহাপরিচালকের সঙ্গে শিক্ষকশিক্ষার্থীদের একটি অংশ মাদ্রাসার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এর পর মহাপরিচালকের অপসারণ দাবি করে মাদ্রাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীদের একাংশ।

পটিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দীন বলেন, মাদ্রাসা মহাপরিচালকের পদত্যাগ ও পুনর্বহাল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাদ্রাসার আশপাশে পুলিশ অবস্থান নেয়। প্রশাসনিকভাবে একাধিকবার তাদের মেসেজ দেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা আলাদাভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে। আজ বুধবার দুই পক্ষের পাঁচজন করে প্রতিনিধি নিয়ে চলমান সংকট ও সমস্যা নিয়ে সাতকানিয়ার এমপি জনাব প্রফেসর ড. আবু নেজা মো. নেজাম উদ্দীন নদভীসহ বসে সমস্যা সমাধান করা হবে।

সমাধানের পথে হাঁটার পরামর্শ এমপি নদভীর : . আবু রেজা নদভী এমপির প্রেস সচিব অধ্যাপক শাব্বির আহমদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটিয়া সরকারি কলেজ মাঠে গতকাল আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভী এমপি বলেছেন, আল জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২৮ অক্টোবর রাতে বহিরাগতদের নিয়ে একটি কুচক্রী মহল মাদ্রাসার কিছু বিপথগামী ছাত্রকে ব্যবহার করে মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাকে লাঞ্ছিত এবং তার কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনা জামেয়া পটিয়ার ঐতিহ্যের প্রতি কুঠারাঘাত। জামেয়াকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতায় সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান তিনি। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে সমাধানের পথে হাঁটার পরামর্শ দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘তোমরা আমাকে বাঁচতে দিলে না’ মেসেজ লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ আজ থেকে