অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে বোয়িংয়ের সমস্যায় ভোগা রকেট স্টারলাইনার। তবে, এর দুই নভোচারীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রেখে এসেছে এটি। অটোপাইলট চালিত নভোযান আইএসএস থেকে রওয়ানা হওয়ার ছয় ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের মরুভূমিতে প্যারাসুটের সাহায্যে অবতরণ করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ। খবর বিডিনিউজের।
ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্যে ক্যাপসুলটিকে একটি সাদা রঙের প্রবাহমান ধারার মতো দেখা গেছে, যা অবতরণ করেছে নিউ মেঙিকো’র স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১ মিনিটে।
এর পরপরই আনন্দের উচ্ছ্বাস বয়ে যায় বোয়িংয়ের মিশন কনট্রোল রুমে। নাসার বিবেচনায় ফিরতি যাত্রায় নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে আনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এর মানে, তাদেরকে সামনের বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মহাকাশ স্টেশনেই থাকতে হবে। সেখানে প্রাথমিকভাবে আট দিনের সংক্ষিপ্ত মিশন পরিচালনার কথা থাকলেও এরইমধ্যে তা আট মাসের বেশি সময় ছাড়িয়ে গেছে। জুনে বোয়িংয়ের বহুল প্রতিক্ষিত ক্যাপসুলটিকে মহাকাশ কক্ষপথে উৎক্ষেপণের পরপরই এর থ্রাস্টারে একাধিক গোলযোগ দেখা গেছে। এমনকি এর প্রোপালশন সিস্টেমেও হিলিয়ামের ছিদ্র ধরা পড়ে। এর জটিল থ্রাস্টার মহাকাশ ও মাটি উভয় জায়গাতেই পরীক্ষা করায় বোয়িং দাবি করেছিল, মহাকাশযানটি নিরাপদেই নভোচারীদেরকে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
তবে, নাসা এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তাদেরকে মহাকাশ স্টেশনেই রেখে আসার নির্দেশ দেয়। স্টারলাইনারের রিএন্ট্রির সময়ও কয়েকটি গোলযোগ দেখা গেছে, যার মধ্যে ছিল আরও থ্রাস্টারজনিত সমস্যা। তবে, স্টারলাইনার সফলভাবে বুলজ–আই ল্যান্ডিং করেছে বলে দাবি করেছেন নাসার কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রাম ম্যানেজার স্টিভ স্টিচ। এক দশক আগে নাসার সঙ্গে চারশ কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে নভোচারীদের মহাকাশযাত্রা নিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়েছে বোয়িং। ২০১৯ সালে কোম্পানিটির প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে কোনো নভোচারী না থাকলেও এতে এত বেশি গোলযোগ দেখা গিয়েছিল যে তারা ২০২২ সালে এর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে বাধ্য হয়। তবে এক্ষেত্রে আরও বেশি গোলযোগ ধরা পড়ে, যেখানে রকেট মেরামত খরচও একশ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।