অবশেষে মহাকাশে পা পড়ল আরব দেশের মহাকাশচারীর। বলা চলে, সহস্র রাতের আরব্য রজনী মুহূর্তে যেন ঝলসে উঠল তাঁর চোখের সামনে। গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর বাইরে স্পেসসুট পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পতাকা নিয়ে বেরোলেন সে দেশের মহাকাশচারী সুলতান আল নেয়াদি। উদ্দেশ্য স্পেসওয়াক। যাকে আরও স্পষ্ট করে বলা হয় মহাকাশযানের বাইরে বিচরণ বা একস্ট্রাভেহিকুলার অ্যাক্টিভিটি। তাঁর স্পেসসুটের হাতায় তখন জ্বলজ্বল করছে একটিই বার্তা ‘অসম্ভবই সম্ভব’। সুলতান অবশ্য একা ছিলেন না, তাঁর সঙ্গে এই ছয় ঘণ্টারও বেশি স্পেসওয়াকে ছিলেন নাসার পরিচিত মহাকাশচারী স্টিফেন বাওয়েন। আইএসএসের ভিতর থেকে তাঁদের সহায়তা করেছেন নাসার দুই ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার, উডি হোবার্গ ও ফ্রাঙ্ক রুবিও। নাসার তরফে লাইভ স্ট্রিম করা হয়েছে এই অভিযান। সুলতান যখন প্রথম মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে পা রাখেন, হোবার্গকে বলতে শোনা যায় অনেক শুভেচ্ছা সুলতান, আপনি আজ এক ইতিহাস তৈরি করতে চলেছেন।
শুধু স্পেস স্টেশনের বাইরে বিচরণই নয়, নাসার তরফে দু’টি কাজও দেওয়া হয়েছিল আল নেয়াদি ও বাওয়েনকে। প্রথমটি, ভবিষ্যতের জন্য আইএসএসে একাধিক সোলার প্যানেল স্থাপন। সেই কাজটি যথাযথ ভাবে সম্পন্ন হয়।
হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারের বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদেরা প্রশংসা করে বলেন, নিখুঁত হাত সুলতানের। তবে দ্বিতীয় কাজটি তাঁরা সম্পন্ন করতে পারেননি। আইএসএসের একটি বাতিল অ্যান্টেনা সরিয়ে ফেলার কাজ ছিল সেটি। গত ২ মার্চ নাসার স্পেস এঙ ক্রু–৬ মিশনে যোগ দেন সুলতান। এটি তাঁর প্রথম স্পেসওয়াক। অন্য দিকে বাওয়েনের এটি অষ্টম স্পেসওয়াক। শুক্রবার অবশ্য বাওয়েনই প্রথম আইএসএসের বাইরে পা রাখেন শুক্রবার। তার পরে আমিরশাহির স্থানীয় সময় বিকেল ৫.৩৯ নাগাদ বেরোন আল নেয়াদি। নাসার হিউস্টনের কেন্দ্র থেকে পুরো সময়টাই যোগাযোগ রাখা হয়েছিল এই দুই মহাকাশচারীর সঙ্গে। বলা হয়েছিল প্রতি ৯০ মিনিট অন্তর তাঁদের দস্তানা ও হেলমেট অ্যাবসর্পশন প্যাড পরীক্ষা করে দেখতে সেগুলি শুকনো আছে কি না। বিন্দুমাত্র জলের কণা দেখলেই আইএসএসের ভিতরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ ছিল। পাশাপাশি খেয়াল রাখা হয়েছিল তাঁদের অক্সিজেন লেভেল ও ব্যাটারির শক্তির দিকেও।–আনন্দবাজার