মরলে একসাথে মরবে, বাঁচলে একসাথে বাঁচবে

মোহাম্মদ নূর উদ্দীন | শনিবার , ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

ইংল্যান্ডের রাজা স্টিফেন বলেছেন, ‘মহান সাফল্য বড় বিপদের ওপর নির্মিত।’ আর বিপদ জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটার সাথে কমবেশি সকলেই পরিচিত। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের সাথে বিপদ লেগেই থাকে। মাইকেল গ্রান্টের মতে, ‘বিপদে সাধারণ মানুষ হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ।’ জুলাই বিপ্লবের পর প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো আন্দোলন, প্রতিবাদ এবং বিভিন্ন দাবি ছিল, এখনো আছে। রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যেও তর্কাতর্কি ও বিভেদ সুস্পষ্ট হচ্ছে, ধীরেধীরে তা অন্তঃকলহে রূপ নিচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি নিয়ে যখনই জনগণ হতাশ হচ্ছিল ঠিক তখনই প্রতিবেশী দেশ আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে লাগলো। তারা বিভিন্ন দিক থেকে আমাদেরকে চাপে রাখতে চায়, বাণিজ্যিক দিক থেকে চাপ, সংখ্যালঘু নিয়ে অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচার, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়াও গত মাস তিনেক ধরে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সুনাম তথা ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার মত নানানরকম ষড়যন্ত্রের আভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এভাবে দেশের ওপর চতুর্দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করছে। এতে করে দেশপ্রেমিক ও রাজনীতি বিশ্লেষকরা তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দেশের ভাগ্যাকাশে ঘোর অন্ধকার। চতুর্দিকে চাপ। এই চাপ থাকবে কিন্তু চাপে চ্যাপটা হওয়া যাবে না। এই চ্যাপটা হতে না দেওয়ার জন্য লাগবে যোগ্য নেতা ও তাঁর যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের সেই যোগ্য নেতা আছে যিনি সারাবিশ্বে বেশ সমাদৃত। তিনি ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এই ক্রান্তি লগ্নে বর্তমান বিপদের সাথে কীভাবে মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সেই বিষয়ে পরামর্শের জন্য সব রাজনৈতিক দলসমূহকে দাওয়াত দিলেন। প্রায় সব রাজনৈতিক দল আসলেন, বসলেন, পরামর্শ দিলেন এবং জাতীয় ইস্যুতে সবাই এক ও অভিন্ন বলে ঘোষণা দিলেন।

তাদের একতা দেখে আবারো প্রমাণিত হলো ব্যক্তির চেয়ে দল বড় আর দলের চেয়ে দেশ বড়। বিপদ মোকাবেলা করতে রাজনৈতিক দলের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যারকে। এই সৌন্দর্য বাংলাদেশে আমি প্রথম দেখেছি। দেশের স্বার্থে সবদল এক হয়েছে। মরলে একসাথে মরবে, বাঁচলে একসাথে বাঁচবে। তবুও মাথা নোয়াবে না বাংলাদেশ। এভাবে যত বিপদ আসবে, আমরা ততই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হবো। তাই বিপদ আসলে সেটাকে নেগেটিভ ভাবার কোনো সুযোগ নেই। বিপদের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহমুখী হয়, ধৈর্য ধারণ করতে শিখে, চিন্তাভাবনার মাধ্যমে মানুষ নতুন নতুন সমাধানের পথ বের করে নেয়, কৌশলী হয়। সর্বোপরি, জাতি, ধর্ম ও দল নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করতে অনুপ্রাণিত করে। যাহোক, বিপদ হলো নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে বিপদ স্থির নয়, তা কেটে যায়। কথিত আছে বিপদে পড়লে বন্ধু বা বন্ধু রাষ্ট্র চেনা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
পরবর্তী নিবন্ধশুধু নিজের জন্য নয় অপরের জন্যও বাঁচতে শেখা জরুরি