ফুটবল ইতিহাসের পাতায় এবার নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে মরক্কো। ফিফা বিশ্বকাপে আফ্রিকার তিনটি দেশ এখনও পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে, ওই পর্যন্তই। এরপর কোয়ার্টার পার করতে পারেনি কোনও দেশ। কিন্তু এবার মরক্কো কাতার বিশ্বকাপে সৃষ্টি করেছে ইতিহাস।
মরক্কোর দুর্দান্ত ফুটবল দলটি এবারের বিশ্বকাপ রাঙিয়ে তুলেছে নতুন রঙে,নতুন ঢঙে। যেমন ফুটবলাররা তেমন করেই দর্শকরা, যারা খেলা দেখতে গিয়েছেন কাতারে, যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অভিবাসী হিসেবে থাকছেন এবং মরক্কোর পথেঘাটে বড় উৎসবে শামিল হয়েছেন যারা, সবাই যেন এই বিশ্বকাপে মরক্কোর জন্য বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এই সমর্থনের প্রতিদান দিয়েছেন মাঠের ফুটবলাররা।
মহাদেশের প্রথম দেশ হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রেখেছে মরক্কো। এখান থেকে দুটি ম্যাচে জয় বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিতে পারে। এখন অবশ্য অনেকেই মরক্কোর জয়কে অঘটন বলতে নারাজ। যে দল বেলজিয়ামকে হারিয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র করেছে, স্পেনকে হারিয়েছে, পর্তুগালকে ৯০ মিনিটের খেলায় হারিয়েছে। তাদের জয়কে অঘটন বলার উপায় নেই, কিন্তু ফুটবল বিশ্লেষকদের মধ্যে অনেকেই মরক্কোর কথা বলেননি। এমনকি বেলজিয়াম ক্রোয়েশিয়ার গ্রুপে থাকায় অনেকে মরক্কো যে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে সেটাই কল্পনা করেননি। সেই মরক্কো এখন কাতার বিশ্বকাপের শেষ চারটি দলের একটি, বলা যায় সেরা চারটি দলের একটি। ম্যাচ দেখে তারকা গায়িকা শাকিরা টুইটারে নিজের বিখ্যাত বিশ্বকাপের গানের একটি লাইন টুইট করেন, “দিস টাইম ফর আফ্রিকা”। মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রাগরাগি ম্যাচ শেষে বলেন, মরক্কো এমন এক দল হয়ে উঠেছে যাদের সবাই ভালোবাসে।
আমরা দেখিয়েছি আমরা কী করতে পারি। রাগরাগির মতে, মরক্কো এমন এক দল হয়ে উঠেছে যারা নিজেদের দৃঢ়তা, হৃদয়ের আকাঙ্খা ও বিশ্বাসকে মাঠে প্রতিফলিত করতে পেরেছে। এখন আর এটা অলৌকিক কিছু নয়, ইউরোপে অনেকে বলতে পারে এটা অলৌকিক কিন্তু আমরা পর্তুগাল, স্পেন, বেলজিয়ামকে হারিয়েছি, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র করেছি কোনও গোল হজম না করে। মরক্কোর গর্বিত এই কোচ মনে করেন, আফ্রিকা ও আরবের দলগুলো অনেক পরিশ্রম করে কিন্তু এবারে তারা গোটা একটি মহাদেশকে অনুপ্রাণিত করতে পেরেছে। মরক্কোর জয়ে জেরুজালেমে হয়েছে উৎসব। ফিলিস্তিনিরা মরক্কোকে সমর্থন দিয়েছে, দিয়েছে আরব বিশ্ব। আরব বিশ্বে অনেকেই মনে করছেন এই জয়, ‘একটা জবাব’।