মন হলো সরষের পুঁটলির মতো

সুব্রত কুমার নাথ | শনিবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

বিধাতার সবচেয়ে অনবদ্য সৃষ্টি মানুষ। আর প্রতিটি মানুষের ভেতরে থাকে এক অদৃশ্য বস্তু, তা হলো মন। মানুষের এ মন বড়ই দুরন্ত। মন কখনো পাখির মতো উড়তে চায়। কখনো রঙিন স্বপ্নে অমিত সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চায়। আবার, সেই মন কখনো কখনো নানান অপকর্ম, অন্যায় ও অসামাজিক কাজেও সায় দেয়। এটাও বাস্তব যে, একই মন নিয়ে স্ত্রী ও সন্তান, দুইজনের আদর দুইভাবে প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, একই মন ক্ষেত্রবিশেষে অনেক কথা বলে। তাই বলতে হয়, বায়ুবেগে প্রবাহিত এই মন বহুরূপী ও বহুগামী। মনের ছলাকলা বুঝা বড় দায়। সবকিছু চেনা সহজসাধ্য হলেও মানুষের মন বুঝা বড়ই দুঃসাধ্য। কিন্তু, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য এই অস্থির মনকে করতে হবে স্থির ও সংযত। যাঁদের মন অস্থির, চঞ্চল, অতৃপ্ত, অসংযমী তাঁরা জীবন সংগ্রামে যেমন জয়ী হতে পারে না, সাধনার জগতেও অগ্রগামী হতে পারে না। সাধারণত মন বলতে বোঝায় বুদ্ধি এবং বিবেকবোধের এক সমন্বিত রূপ যা অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যে দেহের সৌন্দর্যে প্রলোভিত না হয়ে মনের সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দেয়, সেই মহৎ মানুষ। যে মন পরিতৃপ্ত সে অনায়াসে সবকিছু জয়লাভ করতে পারে। মানুষের মনের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো সন্দেহ আর অবিশ্বাস। আর কুৎসিত মন সমস্ত সৌন্দর্যকে আঁধার করে রাখে। মন দুর্বল হলে সে মনে হতাশা আসবেই। হতাশ মনে কখনো উৎসাহ বা উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় না। মনের পতন ঘটলে জীবনের পতন অবধারিত। জীবনকে তাই উচ্চ সোপানে পৌঁছাতে হলে একাগ্রতা ও মনের জোর রাখতে হবে। সাধকের মতে, ‘মন হলো সরষের পুঁটলির মতো’। পুঁটলি খুলে গেলে সরষেকে যেমন এক জায়গায় জড়ো করা যায় না, ঠিক তেমনি মনও নানা জায়গায় বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে। নানান জায়গা থেকে মনকে এক জায়গায় স্থির করতে পারলে অনায়াসেই গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব। জীবনের চরম সত্যকে উপলব্ধি করার জন্য একটি সুন্দর ও একনিষ্ঠ মন থাকা একান্ত আবশ্যক। এতে জীবন হবে উদার, প্রেমময় ও শান্তিপূর্ণ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআত্মহত্যা নয়, জাগরণ হোক আত্মোপলব্ধি
পরবর্তী নিবন্ধব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে কবি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের অবদান প্রসঙ্গে