ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। সেই সঙ্গে তার শেষকৃত্য পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক সরকার প্রধানের মৃত্যুতে বাতিল করা হয়েছে শুক্রবারের সরকারি সব কর্মসূচি। এনডিটিভি লিখেছে, জাতীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে সারাদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। আর শোকের দিনগুলোতে কোনো আনুষ্ঠানিক বিনোদন থাকবে না। খবর বিডিনিউজের।
কংগ্রেসের তরফে আগামী সাত দিনের জন্য দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনসহ দলের সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এ সময়ে দলীয় পতাকাও অর্ধনমিত থাকবে। বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) হাসপাতালে মনমোহন সিং মারা যান। অর্থনীতিবিদ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। রয়টার্স লিখেছে, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভোগা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এদিন বাসায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। মনমোহন সিংহের কফিন রাখা হয়েছে দিল্লির মতিলাল নেহেরু মার্গে তার বাড়িতে। শুক্রবার সেখানে প্রয়াত এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার তার শেষকৃত্য হতে পারে জানিয়ে ইনডিয়া টিভি লিখেছে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে ভারতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। ভারতের উদার অর্থনীতির ‘স্থপতি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিখদের মধ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মনমোহন সিংকে। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে অর্থমন্ত্রী ছিলেন ১৯৩২ সালে পাঞ্জাবের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল জন্মগ্রহণকারী কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী এই অর্থনীতিবিদ। জওহরলাল নেহরুর পর মনমোহন সিং ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি প্রথমবার দায়িত্ব পালনের পর পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া শিখদের মধ্যেও মনমোহন ছিলেন প্রথম রাজনীতিক, যিনি ভারতের সরকার প্রধানের পদে বসেছিলেন। ১৯৮৪ সালের দাঙ্গায় প্রায় তিন হাজার শিখকে হত্যার ঘটনায় জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন মনমোহন। মনমোহনের সিংয়ের জন্ম ১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর; অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা মনমোহন স্নাতকোত্তর করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে অক্সফোর্ড থেকে পিএইচডি করেন।