মদের চালান আটকের ঘটনায় কাস্টমসের পৃথক ৫ মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

আইপি জালিয়াতি করে কন্টেনারভর্তি মদের পাঁচটি চালান আটক হওয়ার ঘটনায় বন্দর থানায় পৃথক ৫টি মামলা দায়ের করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গতকাল ৪টি এবং গত রোববার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার উপ-কমিশনার মো. সাইফুল হক।

তিনি বলেন, আটক ৫টি চালানের মধ্যে তিনটিতে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান পণ্য খালাসের জন্য কাস্টমসের এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেন। ওই তিন চালানের মামলায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাদেও সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও তাদের কর্মচারীদেরও আসামি করা হয়েছে। যে দুটি চালানে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়নি তাতে শুধুমাত্র আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়েছে। পাঁচটি মামলা কাস্টমস হাউসের পৃথক ৫ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) মামলায় বাদী হন বলে জানান তিনি।

মামলায় ১৯৬৯ সালের কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন, বাংলাদেশ পেনাল কোড এবং ১০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ করা হয়।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দুটি মদের চালান খালাস হওয়ার পর ২৩ জুলাই শনিবার ভোরে নারায়নগঞ্জের সোনাগাঁওয়ে অভিযান চালিয়ে আটক করে র‌্যাব। আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে কুমিল্লা ও পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডের হেশি টাইগার কোম্পানি ও বিএইচকে টেঙটাইলের নাম ব্যবহার করে কন্টেনার দুটি খালাস করা হয়। চীন থেকে আসা ১৯ হাজার ৬৫০ কেজি ও ২০ হাজার ৭৫০ কেজি ওজনের কন্টেনার দুটির বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের ডবলমুরিংয়ের কেবি দোভাষ লেনের জাফর আহমেদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।

শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় চালান দুটিতে ১ হাজার মোট ৩১ হাজার ৬২৫ লিটার মদও পাওয়া যায়। এসব মদের আনুমানিক শুল্কায়নযোগ্য মূল্য চার কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এতে আমদানিকারক ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে জানায় কাস্টমস। পরদিন ২৪ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর থেকে আরেকটি মদের চালান আটক করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নীলফামারির উত্তরা ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের নামে টেঙটাইল সুতা ঘোষণা দিয়ে মদের চালানটি আমদানি হয়।

শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে চালানটিতে এক হাজার ৪৩০টি কার্টনে ১৫ হাজার ২০৪ লিটার মদ পাওয়া যায়। আটক হওয়া মদের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ছিল দুই কোটি তিন লাখ টাকা। চালানটিতে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়। চালানটিতে কমপক্ষে এক কোটি ৮৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা পাচার হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। অন্যদিকে গত ২৫ জুলাই বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ড থেকে আরো দুটি মদের চালান আটক করা হয়। নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের নামে প্যাকেজিংয়ের উপকরণ ঘোষণায় একটি ও বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে টেঙটাইল সুতা ঘোষণায় দুই কন্টেনারে মদ নিয়ে আসে আমদানিকারক। তবে চালান দুটিতে বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়নি। কন্টেনার দুটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা ২ হাজার ৮৫৮ কার্টনে ৩১ হাজার ৪৯২ দশমিক ৫ লিটার মদ এবং ১০ লাখ ৬০ হাজার শলাকা বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের আমদানি নিষিদ্ধ সিগারেট পাওয়া যায়। আটক হওয়া চালান দুটিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা শুল্কায়ন যোগ্য মূল্য পেয়েছে ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চালান দুটিতে প্রায় ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা শুরু করতে হবে নিজের ঘর থেকে
পরবর্তী নিবন্ধবিয়ের ৭ মাস চার দিনের মাথায় বাসের ধাক্কায় মৃত্যু