দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, আমরা আশরাফুল মাখলুকাত। অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ পারে না এমন কোনো কাজ নাই। সবচেয়ে ভালো কাজটাও আমরা করছি, আবার সবচেয়ে খারাপ কাজটাও আমরা করছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের ধর্মীয় জীবনে যেসব কোড অব কন্ডাক্ট বা ধর্মীয় আচরণবিধি আছে সেগুলো আমাদের প্রতিপালন করতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর সিরাজুদ্দৌলা রোডের সাফা আর্কেডের হলরুমে আয়োজিত মরহুম হাজী চাঁন্দমিয়া সওদাগর কতর্ৃৃক মদিনায় বাঙালি মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনায় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। আলোচনা সভাটির ব্যবস্থাপনায় ছিল রহমতে আলম হজ্ব কাফেলা। অনুষ্ঠানে ৩৮ জন হাজী সাহেব-সাহেবানকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ১৯৬০ সালে যখন আমাদের দৈনিক আজাদী বের হয়, তখন কোনো অর্গানাইজ হকার ছিল না। আমার বাবা আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। সেখান থেকে কয়েকজন ফকির নিয়ে আসলেন। তখন তিনি ফকিরদের জিজ্ঞেস করলেন, তুমি সারাদিন কত পয়সা পাও। তারা বললেন, ৩-৪ আনা। তখন একটা আজাদী কাগজের দাম ছিল ২ আনা। বাবা তাদের প্রস্তাব করলেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছে ভিক্ষা করো, কিন্তু সকালে তুমি আজাদী পত্রিকা বিক্রি করো। ৫টি বিক্রি করলে ১০ আনা পাওয়া যেত। অনেকে ৫টি বিক্রি করে চলে গেছে। আর যারা ফেরত আসছে, তাদের ৫ দিন পর টাকাগুলো আমার বাবা হাতে নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছেন, এটা কার টাকা। তখন তারা বললো, এটা আপনার টাকা। তখন আমার বাবা বললেন-এই টাকা আমি তোমাদের দিলাম। এখন থেকে প্রতিদিন নগদ টাকা দিয়ে তোমরা আজাদী কিনে নিবে। এই রকম দুইজন ফকির আজাদী বিক্রি করে হজ করেছেন। এ রকম আরো থাকতে পারে; কিন্তু দুইজন ফকির আমাকে বলে গেছেন। আমার বাবা এই যে গতিপথ করে দিলেন সেটি বড় বিষয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট আহমদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৯৯২ সালে মরহুম হাজী চাঁন্দমিয়া সওদাগর মদিনায় বাঙালি হাজীদের সুবিধার জন্য বাঙালি মুসাফির খানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময়টা অনেক প্রতিকূল। কলকাতা-বোম্বে হয়ে জাহাজে করে হজে যেতে হতো। সেই থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত হাজীদের সেবা দিয়ে আসছে মুসাফিরখানাটি।
লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪ এর সাবেক গভর্নর লায়ন মোস্তাক হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ইকবাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪ এর সাবেক গভর্নর শামসুদ্দিন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে হাজীদের পক্ষে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন হাজী হারুনুর রশিদ কুতুবী।












