আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু বেচাকেনায় ১০ বছরের মত এবারও প্রস্তুত রয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ পশুর হাট কর্ণফুলীর মইজ্জ্যার টেক সিডিএ আবাসিক মাঠ। গত শুক্রবার কোরবানির ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পরদিন থেকেই হাটে আনুষ্ঠানিক বেচা বিক্রি শুরু হয়েছে। হাট ঘিরে প্রতিবছরের ন্যায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। পোস্টার, ব্যানার ও প্রচারণায় চলছে দিনরাত মাইকিং। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে গরু, মহিষ, ছাগল ও বেড়া আসতে শুরু করেছে এ হাটে।
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের সাথে লাগোয়া ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা থাকায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে এ হাটের গুরুত্ব রয়েছে মানুষের কাছে। স্থানীয়রা জানান, বিগত ১০ বছর ধরে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যার টেক সিডিএ আবাসিক মাঠে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ এ পশুর হাট বসছে। অনেক দূর দূরান্ত থেকে ক্রেতা–বিক্রেতারা এখানে আসেন। জমজমাট হাট বসে এখানে। এ হাটে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা ৫/৭ হাজার গরু–মহিষ নিয়ে আসেন বলে জানা যায়। এ বছর এখানে বিক্রয়কৃত পশুর উপর ৫% হারে হাসিল নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ হাটের ইজারাদার সূত্রে আরো জানা যায়, বাজারের নিরাপত্তায় পুরো বাজার ঘিরে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং রয়েছে। রাতে ক্রেতা–বিক্রেতাদের সুবিধার্থে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জেনারেটর সুবিধায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেতা–বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় বাজারে অস্থায়ী পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। নামাজের জন্য অস্থায়ী এবাদত খানা ও অজু, গোসল এবং খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থাও রয়েছে। বাজার জুড়ে ত্রিপল দ্বারা চালা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে জাল নোট শনাক্তকরণে রয়েছে অত্যাধুনিক মেশিনও। এছাড়াও বাজারে পশু খাদ্যের সহজ লভ্যের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে, কুড়া, ভুষি, খৈল, শুষ্ক ও কাঁচা ঘাস সহ বিভিন্ন খাদ্যের পাইকারি ও খুচরা সুবিধায় ক্রয়ের পৃথক স্টল। এ হাটে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা দামের গরু–মহিষ পাওয়া যাচ্ছে।
হাটে পশুর খুঁটিগুলোর পর্যাপ্ত দূরত্ব থাকায় বিক্রেতারা সহজেই এ হাটে পশু দেখাশুনার সুযোগ পান বলে জানান পটিয়া থেকে পশু ক্রয় করতে আসা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
হাটের ইজাদার সিন্ডিকেটের সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, কর্ণফুলী মইজ্জ্যার টেক সিডিএ আবাসিকের কুরবানির পশুর হাট দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের জন্য অত্যন্ত সুন্দর যোগাযোগ সুবিধা একটি হাট। এখানে চট্টগ্রামের মহেষখালী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, বাঁশখালী ছাড়াও উত্তর বঙ্গের রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ, পাবনা, ঈশ্বরদী, যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, শেরপুর, কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্রেতারা গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বিক্রির জন্য আনেন। ঠিক একইভাবে চট্টগ্রাম সহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার ক্রেতারা এখান থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে কুরবানির পশু কিনতে আসেন। কুরবানির ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত এখানে পশু বেচাকেনা হবে। কারণ কুরবানির পশু রাখার নিরাপদ ও পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ঈদের দিন সকালেও অনেকে এ হাটে পশু কিনতে আসেন।