ভয় ডরহীন ক্রিকেটই অধিনায়ক সোহানের মূলমন্ত্র

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২৫ জুলাই, ২০২২ at ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

কদিন আগেও দলে নিজের জায়গা পাওয়াটা কঠিন ছিল নুরুল হাসান সোহানের জন্য। যদিও এখনো তিনি দলে জায়গা পাকা করার লড়াইয়ে অবতীর্ন। তবে সোহানের কপাল খুলে গেছে দ্রুত। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছেন এই তরুন। যদিও প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের নেতৃত্ব পেয়ে রোমাঞ্চের সাগরে ভাসছেন না তিনি। বলছেন এই দায়িত্ব পাওয়াটা যেমন গর্বের তেমন চ্যালেঞ্জেরও। তাইতো সামনের দিনের চ্যালেঞ্জই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এই সোহানোর কাছে। মাহমুদউল্লাহর অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য নেতৃত্ব পেয়েছেন সোহান। আগামীকাল মঙ্গলবার জিম্বাবুয়ের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে টি-টোয়েন্টি দল। তার আগে গতকাল রোববার প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।
সেখানে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন দল হিসেবে সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য। নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি। অবশ্যই এট গর্বের ব্যাপার। এটা অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জ আমার জন্য। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে সোহানের। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে ওঠে আসা এই কিপার ৯৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, একশর বেশি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ এবং খেলেছেন প্রায় দেড়শ টি-টোয়েন্টি। অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। তাইতো সোহান বললেন ক্রিকেট এবং সব কিছু নিয়ে প্রত্যাশাটা আমার ভেতরে খুব কম। সব কিছু মিলিয়ে রোমাঞ্চ বা এসব অনেক কিছুই কম। আমি নিজে সততার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করব এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। ফল নিয়ে কিংবা ভবিষ্যত বা অতীত নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। চাপ থেকে আমি এখন দূরে থাকার চেষ্টা করি। আর সেটা আমি গত অনেক দিন ধরেই করতে পারছি। তাই চাপ মুক্ত থাকা আমার জন্য বড় ব্যাপার হবে না।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩৩ ম্যাচে ২৭১ রান করেছেন সোহান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩০। একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যা মোটেও আদর্শ নয়। তবে তিনি বলেন টি-টোয়েন্টিতে আমরা যারা মিডল অর্ডারে বা লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করি, সেখানে রানের সংখ্যার চেয়ে প্রভাবটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ১৫-২০ রান দেখতে অনেক ছোট লাগতে পারে তবে আমার মনে হয়, এই রান খেলায় কতটা প্রভাব রাখতে পারছে সেটাই আমার চিন্তা থাকবে। টি-টোয়েন্টিতে আমি যেখানে ব্যাটিং করি সেখান থেকে পঞ্চাশ বা একশ করার সুযোগ খুব কম থাকে। দলে চাহিদা যতটুকু থাকবে সেই প্রভাবটা আমি ফেলার চেষ্টা করব। এক সিরিজের জন্য নেতৃত্ব পাওয়া সোহান খুব দূর ভবিষ্যতে তাকাচ্ছেন না। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরের ভাবনায় কঠিন করে তুলতে চাচ্ছেন না আসন্ন চ্যালেঞ্জ। এক সিরিজের জন্য আমি নেতৃত্ব পেয়েছি। আমার ভাবনা এই তিন ম্যাচ নিয়েই। আমার মনে হয়, আমরা কীভাবে এখানে ভালো করতে পারি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে জিতবোই এমন কোনো কথা নেই। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে যেন শতভাগ দিতে এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারি । ফল যেন ইতিবাচক হয় অবশ্যই সেই লক্ষ্য থাকবে। আমি আসলে ভবিষ্যৎ বা অতীত নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে চাই না। এখন যে কাজ করছি আমি সততার সঙ্গে সেই কঠোর পরিশ্রম করে যেতে চাই। ভবিষ্যতে কিছু হবে সেটা নিয়ে নিয়ে আমি চিন্তিত না। যেহেতু জিম্বাবুয়ে সিরিজ আগে আসবে, এই তিন ম্যাচে নিজের সেরাটা দিতে চাই। বাংলাদেশ তার অধীনে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলবে বলে জানিয়ে দিলেন সোহান। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই চেষ্টা করব যেন এটা করতে পারি। আগে থেকে ভেবে নিলে প্রক্রিয়া ঠিক থাকে না। আশা করি প্রক্রিয়াটা ধরে রাখতে পারব। সোহানের অধিনায়কত্ব অধ্যায় শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি খেলতে সেদিন মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সিরিজের পরবর্তী দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৩১ জুলাই ও ২ আগস্ট।