ভ্যাট কমানোর প্রভাব ভোজ্যতেলের বাজারে

সয়াবিন লিটারে ১২, পাম তেল কমল ১৯ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১২ মার্চ, ২০২২ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

ভোজ্যতেল আমদানিতে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মওকুফের প্রভাবে সয়াবিন ও পামতেলের দাম কমতে শুরু করেছে। ভোজ্যতেলের লাগাম টানতে সরকারের নীতিনির্ধারকরা সপ্তাহখানেক ধরে ভ্যাট কমানোর কথা বলে আসছিলেন। এতে গত চারদিনের ব্যবধানে মণপ্রতি পাম তেলের দরপতন হয়েছে ৭০০ টাকা (লিটারে প্রায় ১৯ টাকা) এবং সয়াবিন তেলের দরপতন হয়েছে ৪৫০ টাকা (লিটারে ১২ টাকা)। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বুকিং দর এখনো কমেনি। তবে বর্তমানে দাম কমার অন্যতম কারণ হল অনিশ্চয়তা। ভ্যাট কমানোর পরে তেলের বাজার ঠিক কত টাকা কমে সেটি অনেক ব্যবসায়ী ধারণা করতে পারছেন না। এতে বেচাবিক্রি থমকে যায়।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারদিন আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৯০০ টাকায়। যা সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকায়। অন্যদিকে চারদিন আগে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৬ হাজার ১৫০ টাকায়, গত বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ টাকায়।
অন্যদিকে ভোক্তারা বলছেন, তেলের দাম কমছে এটাতে স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে প্রচুর টাকা মুনাফা করেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য হয়তো দাম কমিয়ে সাময়িক বিরতি নেয়ার চেষ্টা। সুযোগ বুঝে আবারও দাম বাড়িয়ে দেবে ঠিকই। খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ী মো. আবু বক্কর দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার ভ্যাট মওকুফের সিদ্ধান্তের কারণে তেলের দাম কমে গেছে। তবে ভ্যাট কমার পরের হিসেব ধরলেও বাজার এখন অনেক নেমে গেছে। পাম তেলের ক্ষেত্রে প্রতি গাড়িতে প্রায় এক লাখ টাকা কমে গেছে। এটি বাজার ব্যবস্থাপনার একটি খারাপ দিকও বটে। যতটা না ভ্যাট মওকুফের কারণে দাম কমেছে, তারচেয়ে বেশি দাম কমেছে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তায়। এভাবে দাম কমতে থাকলে এবং প্রশাসনের অভিযানের চাপ থাকলে অনেকে হয়তো আমদানি কমিয়ে দেবে। তেলের বাজার শতভাগ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, তেলের বাজারে এই মুহূর্তে ভ্যাট কমানোটা সরকারের একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এখন দেখতে হবে ভ্যাট কমানোর কারণে বাজারে প্রভাবটা কয়দিন থাকে। বিভিন্ন সময় আমরা জানতে পেরেছি ভোজ্যতেলের সরবরাহ ঘাটতি নাই। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর স্থিতিশীল রয়েছে। মাঝখানে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দাম কিছুটা বেড়ে আবার কমে গেছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা বারবার আন্তর্জাতিক বাজার বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। এখন সরকারের উচিত হবে নিয়মিত তেলের বাজার মনিটরিং করা।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভ্যাট-শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকালো পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে আন্দোলন অব্যাহত থাকে
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক শনাক্ত নামল তিনশর নিচে