ভোট কম পেয়েও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজপুত্র, আদালতে গেল বিরোধীরা

| রবিবার , ২৪ জুলাই, ২০২২ at ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ

পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী থেকে ৭ ভোট কম পেয়েছিলেন হামজা। কিন্তু বিরোধী প্রার্থীর বাক্সে পড়া ১০ ভোট ডেপুটি স্পিকার বাতিল করে দিলে পাল্টে যায় ফল। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পার্লামেন্টে বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা মুখ্যমন্ত্রী পদে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দিলেও ডেপুটি স্পিকারের বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে ফল উল্টে গেছে। ডন জানিয়েছে, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পদের ভোটে পিটিআই সমর্থিত চৌধুরী পারভেজ ইলাহি ৩৭১ সদস্যের পার্লামেন্টের ১৮৬ জনের সমর্থন নিশ্চিত করেছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হামজা শাহবাজ পান ১৭৯ ভোট। হামজা পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে। পিটিআই প্রার্থী করেছিল পাকিস্তান মুসলিম লীগ কায়েদে আজমের (পিএমএল-কিউ) ইলাহিকে। দলটির প্রধান সুজাত হোসেন তার দলের পার্লামেন্ট সদস্যদেরকে হামজাকে ভোট দিতে বলেছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে পিএমএল-কিউর পার্লামেন্টারি দলের ১০ সদস্য ইলাহিকে ভোট দেন। সে কারণে পাঞ্জাব পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মাজারি এই দশজনের ভোট বাতিল করে দিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের প্রার্থী হামজাকে জয়ী ঘোষণা করেন। পিটিআই এবং তাদের শরিকরা ডেপুটি স্পিকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের ভাষ্য, সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টারি দলের সিদ্ধান্তে অন্য কারও হস্তক্ষেপের সুযোগ না থাকায় ডেপুটি স্পিকার ওই ১০ সদস্যের ভোট বাতিল করতে পারেন না। ইমরান পরে পাঞ্জাব পার্লামেন্টের এ ‘নাটকের’ প্রতিক্রিয়ায় সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখাতে বলেছেন। আদালতে এর ফয়সালা হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শুক্রবার রাতেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও জমা পড়েছে।

সমপ্রতি পাঞ্জাবে ২০টি আসনের উপনির্বাচনে ইমরানের দলই ১৫টি আসনে জেতে। চারটিতে জেতে পিএমএল-এনের প্রার্থীরা। পরে লাহোর হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে পার্লামেন্টকে নির্দেশ দিলে তা মেনেই শুক্রবার ভোট হয়। যে ২০টি আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল, সেগুলোর সবগুলোই একসময় পিটিআইয়ের ঝুলিতে ছিল।
মার্চে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের পাশাপাশি পাঞ্জাব পার্লামেন্টেও ইমরানের দলে ভাঙন ধরে। দলটির বিদ্রোহীরা পিএমএল-এনের সঙ্গে হাত মেলালে মুখ্যমন্ত্রীর পদ হারান পিটিআই নেত উসমান বুঝদার। নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন শাহবাজতনয় হামজা। ইমরান ওই দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে গেলে কমিশন তাদের সদস্যপদ বাতিল করে ওই ২০ আসনে উপনির্বাচনের ঘোষণা দেন।

নির্বাচনের প্রচারণায় ইমরান দলত্যাগীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাদের ভোট না দিতে পাঞ্জাবাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। উপনির্বাচনের ফলকে পিএমএল-এনের জন্য বড় ধরনের সতর্ক সংকেত বলছেন বিশ্লেষকরা। সামনের নির্বাচনে ইমরান বড় জয় নিয়ে পার্লামেন্টে আসতে পারেন, পাঞ্জাবে ভোটের ফল সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করছেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেভ দ্য হাঙ্গার পিপলের ঈদ পুনর্মিলনী
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২টি সড়ক উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন